close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

তিন বাংলাদেশিকে ভারতে নিয়ে দেহ ব্যবসা

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশ থেকে কাজের আশায় ভারতে গিয়ে ভয়ংকর দেহব্যবসার ফাঁদে পড়েন তিন নারী। মুম্বাইয়ের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করে পুলিশ। জড়িত চক্রে রয়েছে আন্তর্জাতিক পাচারকারী, স্থানীয় দালাল ও ঘুষখোর কর..

চাকরির মিষ্টি স্বপ্ন দেখিয়ে বাংলাদেশি তিন নারীকে ভারতে পাচার করে জোর করে দেহব্যবসায় বাধ্য করার ঘটনা ফাঁস হয়েছে। মুম্বাই শহরের অভিজাত একটি আবাসিক এলাকায় গোপন সূত্রের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ভারতীয় পুলিশ এই তিন নারীকে উদ্ধার করেছে।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বাকি আরও তিনজনকে ধরতে চলছে তীব্র অভিযান।

শনিবার (৭ জুন) স্থানীয় পুলিশের একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মুম্বাইয়ের একটি বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখানেই খুঁজে পাওয়া যায় তিন হতভাগ্য বাংলাদেশি নারীকে। তাদের ভাষ্যমতে, হাসপাতালের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তারা ভারতে নিয়ে আসা হয়। তবে বাস্তবে তাদেরকে ফেলে দেওয়া হয় ভয়াবহ এক দেহব্যবসার জালে।

উদ্ধার হওয়া তিন নারী জানিয়েছেন, গত মাসে সীমান্ত পেরিয়ে তারা ভারতে প্রবেশ করেন। ভিনদেশে একটি সচ্ছল ভবিষ্যতের আশায় তারা এ সিদ্ধান্ত নেন। তবে সীমান্তে ভারতীয় নিরাপত্তা কড়াকড়ি থাকলেও ঘুষ দিয়ে তাদের প্রবেশ করিয়ে দেয় পাচারকারীরা। পাচারের পুরো কাজটি চলে পরিকল্পিতভাবে—যেখানে পাচারকারীদের সঙ্গে যুক্ত থাকে কিছু অসাধু সরকারি কর্মকর্তা।

ভারতে ঢোকার পর প্রথমে তাদের রাখা হয় কলকাতায়, পরে ট্রেনে করে নেওয়া হয় মুম্বাইতে। সেখানে গিয়ে একাধিকবার বাসা বদল করিয়ে শেষ পর্যন্ত একটি বাড়িতে রাখা হয়। সেখানেই শুরু হয় তাদের জীবনের সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায়—বাধ্য হয়ে শরীর বিক্রি করা।

ধরা পড়েছে একজন, বাকি তিন জন ধরাছোঁয়ার বাইরে:
মুম্বাই পুলিশ জানিয়েছে, আটক ব্যক্তির নাম মানসার আহমেদ শেখ। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক মানবপাচার ও দেহব্যবসা চক্রের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ ছাড়া আরও তিনজন এই চক্রে জড়িত বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলেন: মেহেদী হাসান, সঞ্জীব ওরফে বচ্চন, এবং আকাশ ওরফে শাহীন। তাদের ধরতে বিভিন্ন স্থানে একযোগে অভিযান চালানো হচ্ছে।

নারীদের নিরাপত্তায় আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর:
উদ্ধার নারীদের বর্তমানে স্থানীয় একটি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে তাদের মানসিক ও স্বাস্থ্যগত সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “এই নারীরা কঠিন মানসিক অবস্থার মধ্যে আছেন। আমরা তাদের সবধরনের আইনি ও মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করছি।”

আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশি নেটওয়ার্ক?
এই ঘটনার পর ভারতের গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত অঞ্চলে সক্রিয় মানব পাচারকারী নেটওয়ার্ক সম্পর্কে অনুসন্ধান শুরু করেছে।
বিশেষ করে যারা বাংলাদেশ থেকে নারীদের চাকরি দেওয়ার নামে এনে এই জঘন্য ব্যবসার জালে ফেলছে, তাদের ধরতে দুই দেশের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

 

এই ঘটনাটি বাংলাদেশের নারী পাচার রোধে প্রশাসনিক ব্যর্থতা ও দুর্নীতির একটি চিত্রও তুলে ধরে। সীমান্তে কড়া নজরদারি ও পাচার রোধে আন্তঃদেশীয় সহযোগিতা ছাড়া এই ভয়াবহ মানবিক সংকট রোধ করা সম্ভব নয়।

একটি অসহায় জীবনের বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা যেমন এই নারীদের কাছে বাস্তব, তেমনি আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য একটি সতর্কবার্তা।

कोई टिप्पणी नहीं मिली


News Card Generator