সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অব্যাহতি, ১২ বছর পর মুক্ত জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলাম..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম অবশেষে খালাস পেয়ে কারামুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের নজিরবিহীন রায়ের মাধ্যমে বাতিল হয়েছে ট্রাইব্যুনালের সব দণ্ড। কীভাব..

দীর্ঘ এক যুগের আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে কারামুক্ত হলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এই নেতার সব সাজা বাতিল করে তাকে খালাস দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এর মধ্য দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংক্রান্ত আইনি ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় সূচিত হলো।

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, বুধবার (২৮ মে) সকাল ৯টা ৫ মিনিটে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তির বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার এক ঐতিহাসিক রায়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ২০১৪ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায় বাতিল করে দেন। ওই রায়ে আজহারুলকে ছয়টি ঘটনায় গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ ও নির্যাতনের জন্য দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদের সাজা দেওয়া হয়েছিল।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে আজহারুল ইসলামের আপিল গ্রহণ করেন এবং তাকে খালাস দেন। এই রায় ঘোষণার পরপরই ট্রাইব্যুনাল থেকে মুক্তির আদেশ দেওয়া হয়।

আইনজীবীরা বলছেন, এটি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন ঘটনা। এর আগে কেউ রিভিউ ও আপিলের মাধ্যমে এভাবে সম্পূর্ণ খালাস পাননি। এই সিদ্ধান্তে আইনি ও রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

আজহারুল ইসলাম ২০১২ সালের ২২ আগস্ট রাজধানীর মগবাজারের নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন। তখন তিনি জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্বে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পর দীর্ঘ সময় কারাভোগ করেছেন তিনি। প্রথম দফায় ২০১৯ সালে তার মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখেছিল তৎকালীন আপিল বিভাগ। কিন্তু দ্বিতীয় দফার আপিলে রিভিউ আবেদনের পর গত বছরের আগস্টে সরকারের পরিবর্তনের পর এই আপিল গৃহীত হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মামলায় বিচারিক ত্রুটি এবং সাক্ষ্য-প্রমাণের দুর্বলতা সুপ্রিম কোর্টকে নতুন করে বিষয়টি মূল্যায়নে বাধ্য করে। ফলে পুনর্বিবেচনায় আদালত দোষ প্রমাণে ব্যর্থ হয় এবং রায় বাতিল করেন।

আজহারুল ইসলামের মুক্তির ঘটনায় সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে আলোচনা তুঙ্গে। কেউ বলছেন, এটি আইনের বিজয়, আবার কেউ প্রশ্ন তুলছেন বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে।

বর্তমানে আজহারুল ইসলাম চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং মুক্তির পর তার স্বজনরা হাসপাতালে গিয়ে দেখা করেছেন বলে জানা গেছে।

Комментариев нет