close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

সরকারের সঙ্গে দ্বন্দ্বে যাবে না, ইশরাক ইস্যুতে নমনীয় হবে বিএনপি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
লন্ডনে ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকের পর কৌশল পাল্টাচ্ছে বিএনপি। ইশরাক হোসেন ইস্যুতে নমনীয় অবস্থান নিচ্ছে দলটি—সরকারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব নয়, ফেব্রুয়ারির সম্ভাব্য নির্বাচনের দিকে দৃষ্টিই এখন বিএনপির মূল ..

সরকারের সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থান নয়, বরং রাজনৈতিক বাস্তবতা মেনেই চলতে চায় বিএনপি। দলটির সর্বোচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এখন এই সিদ্ধান্তই পরিলক্ষিত হচ্ছে। সম্প্রতি লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যকার একান্ত আলোচনার পর বদলেছে কৌশল। সেখানে একটি মৌলিক বার্তা এসেছে—বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকারবিরোধী দ্বন্দ্ব নয়, বরং নির্বাচনী পথেই এগোতে হবে।

গত সোমবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির নিয়মিত সভায় এই নীতি নির্ধারণ হয়। আলোচনায় অংশ নিয়ে অধিকাংশ সদস্য একমত হন যে, সরকারের সঙ্গে বিরোধিতা করে আন্দোলনে যাওয়ার পরিবর্তে আপাতত নমনীয়তা দেখানোই শ্রেয় হবে। বিশেষত, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের শপথ না নেওয়া সংক্রান্ত ইস্যুতে চলমান তৎপরতা দলের বৃহত্তর স্বার্থের পরিপন্থী হতে পারে বলেও অভিমত দেন নেতারা।

স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য জানান, ইশরাক হোসেন সম্প্রতি নিজেকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা দিয়ে নগর ভবনে উপস্থিত হন এবং সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই ঘটনা নিয়ে কমিটির ভেতরে বিস্তর আলোচনা হয়। অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এ ধরণের একক পদক্ষেপ বিএনপি ও সরকারের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে। এতে করে সম্ভাব্য নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট হতে পারে।

যদিও ইশরাকের পক্ষে কিছু সদস্য যুক্তি তুলে ধরেন। তারা বলেন, আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশের পরও যদি শপথ না নিতে দেওয়া হয়, তাহলে সেটি একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত বহন করে। তবে অধিকাংশ নেতাই বলেন, বিষয়টি এখন নমনীয়ভাবে মোকাবিলা করা উচিত এবং সরাসরি আন্দোলনে না গিয়ে কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণই দলীয় স্বার্থে শ্রেয়।

বৈঠকে উপস্থিত থাকা একজন সিনিয়র নেতা বলেন, “আমরা দেখেছি, সরকারের সঙ্গে আগের কিছু ঘটনায় সম্পর্ক কিছুটা কঠিন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। বিশেষ করে লন্ডনের বৈঠকের পর পারস্পরিক দূরত্ব কিছুটা কমেছে। এখন যদি আমরা আবার আন্দোলন শুরু করি, তাহলে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের সম্ভাবনা ভেস্তে যেতে পারে।”

বৈঠকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল—তারেক রহমান ও ড. ইউনূসের আলোচনার প্রসঙ্গ। যদিও কী আলোচনা হয়েছে, তা প্রকাশ করা হয়নি, তবে বৈঠকের শুরুতেই তাকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়। দলের একজন শীর্ষ নেতা বলেন, “বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে, এটাই আমাদের বার্তা। এর বাইরে আমরা কোনো ব্যক্তিগত আলোচনা জানতে চাইনি এবং সেটি আমাদের এখতিয়ারে পড়ে না।”

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মঙ্গলবার বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান সাংবাদিকদের বলেন, “ইশরাক ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে, তবে সিদ্ধান্ত বিষয়ে দলের পক্ষ থেকেই জানানো হবে।”

অন্যদিকে, ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, “দলের মহাসচিব সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে যে তথ্য দেবেন, সেটাই হবে দলের অবস্থান। আমরা আলাদাভাবে মন্তব্য করবো না।”

সব মিলিয়ে রাজনৈতিক সংকট থেকে বেরিয়ে নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হওয়ার কৌশলেই এখন বিশ্বাস রাখছে বিএনপি। আন্দোলনের উত্তাপ কমিয়ে কৌশলগত নমনীয়তা ও আলোচনার পথেই এগিয়ে চলার সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে তারা।

এই নতুন অবস্থান আগামী রাজনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে আপাতত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে—সরকারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব নয়, ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণই বিএনপির প্রধান লক্ষ্য।

Hiçbir yorum bulunamadı


News Card Generator