close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

সরকারের নিরপেক্ষতার পর্দার পেছনে ঘাপটি মেরে থাকা অগণতান্ত্রিক শক্তির পরাজয় ঘটেছে..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জাতীয় প্রেসক্লাবে ইশরাক হোসেন বলেন, তাঁর শপথে বাধা প্রমাণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ নয়। অগণতান্ত্রিক শক্তির পরাজয় হয়েছে—আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন তিনি।..

জাতীয় রাজনীতির নাটকীয় এক মোড়—বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের বক্তব্যে ফাঁস হলো অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতার মুখোশ। আজ দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান বাধাগ্রস্ত করে সরকারের ভেতরে লুকিয়ে থাকা অগণতান্ত্রিক শক্তিগুলো নিজেরাই নিজেদের মুখোশ খুলে ফেলেছে।

ইশরাক হোসেন দাবি করেন, তাঁকে মেয়র হিসেবে শপথ নিতে বাধা দিয়ে সরকার প্রমাণ করেছে, এটি আদৌ কোনো নিরপেক্ষ সরকার নয়। এ সময় তিনি বলেন, “এই সরকারের নিরপেক্ষতার পর্দার পেছনে ঘাপটি মেরে থাকা অগণতান্ত্রিক শক্তির পরাজয় ঘটেছে।” জনগণকে ধোঁকা দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার দেশি-বিদেশি চক্রান্ত এবার ব্যর্থ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আইনি লড়াই ও আন্দোলনের পেছনের উদ্দেশ্য

তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনের কোনো পরিকল্পনা তার ছিল না। বরং, অবৈধ মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে আদালতের রায়কে একটি স্থায়ী দলিল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে দলীয় সিদ্ধান্তেই আন্দোলনে নেমেছেন।

এই রায় আইন ও ন্যায়ের চূড়ান্ত বিজয়—বলে মন্তব্য করেন তিনি।

একপর্যায়ে সংবাদ সম্মেলনে ইশরাক হোসেন অভিযোগ করেন, সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইশরাক প্রশাসক হওয়ার প্রস্তাব দম্ভ ভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এ বিষয়ে ইশরাক বলেন, “একজন বৈধ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির কাছে প্রশাসকের প্রস্তাব অপমানজনক।” তিনি অভিযোগ করেন, এই মন্তব্যের মাধ্যমে সরকার ভোটারদেরও অপমান করেছে।

তার ভাষায়, “আসিফ বলেছে আমি বিএনপির এক নেতার ইন্ধনে আন্দোলন করেছি। এটা ঢাকার হাজারো ভোটারের অবমাননা, যারা ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে আন্দোলনে ছিল। এই মন্তব্যের জন্য তাকে অবশ্যই জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে আরও এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তোলেন ইশরাক। তিনি বলেন, গতকাল নগর ভবনে তাঁর সমর্থকদের ওপর হামলা হয়েছে এবং এ হামলার নেপথ্যে ছিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ঘনিষ্ঠ পরিচিত কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা।

তার অভিযোগ, এই হামলার মূল হোতা গোলাম কিবরিয়া—ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলী ও বিএনপিপন্থী সংগঠনের নেতা। কিবরিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ইশরাক বলেন, “এই ব্যক্তিদের কেউ কেউ বিএনপি ঘরানার পরিচয় দিলেও দলীয় পদে নেই, বরং তারা ফ্যাসিবাদের দোসর।”

সংবাদ সম্মেলনে উঠে আসে আরেকটি বিতর্ক। পূর্বে ইশরাক হোসেনের আয়োজিত সভায় ‘মাননীয় মেয়র’ শব্দ ব্যবহার করা হলেও, আজকের ব্যানারে তা ছিল না। সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, কেন ‘মাননীয় মেয়র’ লেখা ব্যানার বাদ গেল? ইশরাক এই প্রশ্ন এড়িয়ে যান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক কাউন্সিলর বাদল সরদার, যিনি পূর্বে মেয়র তাপসের অনুগত হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁকে সংবাদ সম্মেলনে পাশে বসানো নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইশরাক কোনো ব্যাখ্যা দেননি।

এদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগর ভবনের নিচতলায় ইশরাক-সমর্থকেরা অবস্থান নেন। বেশির ভাগ সমর্থক এসেছিলেন ঢাকা দক্ষিণের বিভিন্ন এলাকা থেকে। শহরের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক সমীকরণ কোনদিকে যাবে, সেটি নিয়ে নগর ভবনে একধরনের অনিশ্চয়তা ও আতঙ্ক কাজ করছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির তিনজন কর্মকর্তা বলেন, গতকালের ঘটনার পর থেকে অফিসের পরিবেশ থমথমে। কর্মচারীরা উদ্বেগে আছেন—আবারও কোনো সংঘর্ষ ঘটে কিনা সেই আশঙ্কায়।

সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে এক সাংবাদিক জানতে চান, নগর ভবনে ইশরাক-সমর্থকদের অবস্থান চলমান থাকবে কিনা। তবে ইশরাক এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই সংবাদ সম্মেলন শেষ করে দেন।

没有找到评论