close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

সরকার যদি উদ্যোগ না নেয়, আমরা বসে থাকব না ,নাহিদ ইসলাম

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
নাহিদ ইসলাম জানালেন, সরকার উদ্যোগ না নিলে এনসিপি নিজেরাই জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ প্রকাশ করবে। পদযাত্রার মাধ্যমে জনমত গড়ে তুলবে তারা।..

জুলাই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তৈরি করা "জুলাই ঘোষণাপত্র" এবং "জুলাই সনদ" নিয়ে নতুন বার্তা দিয়েছেন নবগঠিত জাতীয় রাজনৈতিক জোট এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। সোমবার (১৮ জুন) তিনি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে এক বিস্তৃত পোস্টে এই বার্তা দেন। তার পোস্টে উঠে এসেছে জুলাই ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস, শহীদদের অবদান, রাজনৈতিক নিরাপত্তা, এবং একটি রাষ্ট্রীয় দলিল গঠনের আহ্বান।

নাহিদ ইসলাম স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, সরকার যদি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়, তবে তারা চুপ করে বসে থাকবে না। বরং এনসিপি নিজস্ব উদ্যোগেই জুলাই ঘোষণাপত্রজুলাই সনদ প্রকাশ করবে এবং সেই অনুযায়ী রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করবে।

নাহিদ ইসলামের ভাষ্যমতে, "জুলাই ঘোষণাপত্র" হচ্ছে ৩৬ জুলাই (৫ আগস্ট) ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে নির্মিত একটি ঐতিহাসিক দলিল। এটি শহীদদের আত্মত্যাগ, নেতৃত্বের সাহসিকতা এবং রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ কাঠামোর রাজনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য বলে তিনি মনে করেন।

তিনি জানান, গত ৩১ ডিসেম্বর ছাত্র নেতৃত্ব একটি খসড়া ঘোষণাপত্র দিতে চেয়েছিল, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, সব দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সরকারিভাবে একটি যৌথ দলিল প্রকাশ করা হবে। এরপর ছাত্ররা তাদের উদ্যোগ থেকে সরে আসে।

নাহিদ অভিযোগ করেন, সরকার পরপর দুইবার সময় দিলেও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। সরকারি দিক থেকে স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়নি যে কেন ঘোষণা বিলম্বিত হচ্ছে বা কোথায় সমস্যা হচ্ছে।

তিনি লিখেছেন, "সরকার যদি কোনো উদ্যোগই না নেয় আমরা বসে থাকব না। আমাদের বক্তব্য, আমাদের ইশতেহার অবশ্যই আমরা প্রকাশ করব।"

তার মতে, এটি শুধুমাত্র এনসিপির নয়, বরং সকল পক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি জাতীয় দলিল হওয়া উচিত। তিনি বলেন, "সবাই মিলে আমরা দলিল তৈরি করতে পারলে সরকার সেটা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে। জুলাই ঘোষণাপত্র শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকেই পাঠ করা হবে।"

জুলাই সনদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি হবে রাষ্ট্রের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তনের নীতিগত দলিল। সংবিধানের যেসব জায়গায় পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে, তা এই সনদে চিহ্নিত করা হবে। এই সনদে সব রাজনৈতিক দলের স্বাক্ষর থাকবে এবং পরবর্তী নির্বাচিত সরকার বাধ্য থাকবে এই সনদ অনুসারে সংস্কার চালিয়ে যেতে।

তিনি আরও বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি এখনো নির্ধারিত হয়নি। গণভোট, গণপরিষদ অথবা সংসদে সংশোধনীর মাধ্যমে তা কার্যকর হতে পারে।

নাহিদ ইসলাম কড়া ভাষায় বলেন, “যদি কোনো একটি পক্ষ দলীয় স্বার্থে এই ঐকমত্যের প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে, তাহলে সরকারকে অবশ্যই জনগণ ও অন্যান্য পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে এই ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করতে হবে।”

তিনি সতর্ক করেন, “জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র দিতে না পারলে সরকারের অধিকার থাকবে না এই আন্দোলন বা উদযাপনের অংশ হতে।”

সবশেষে নাহিদ ইসলাম জানান, "আগামীকাল থেকেই এনসিপির পক্ষ থেকে ‘জুলাই পদযাত্রা’ শুরু হচ্ছে।" এই পদযাত্রার মূল বার্তা হবে—দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রায় যোগ দিন।

তিনি বলেন, “পথে প্রান্তরে আমরা মানুষের সঙ্গে কথা বলব। আমাদের কথা পৌঁছে দেব দেশের প্রতিটি প্রান্তে।”

জুলাই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে নাহিদ ইসলামের এই ঘোষণা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। সরকার যদি এই আন্দোলনকে অবহেলা করে, তাহলে এনসিপি-সহ বিভিন্ন পক্ষ নতুন রাজনৈতিক মেরুকরণের পথে হাঁটতে পারে—যা ভবিষ্যতের জন্য বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

Keine Kommentare gefunden