সন্তান জন্মে উৎসাহিত করতে বাড়ি বাড়ি ফোন দিচ্ছে চীন সরকার!

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
চীন, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ, একসময় ‘এক পরিবার, এক সন্তান’ নীতি প্রয়োগ করেছিল। তবে বর্তমানে দেশটি সন্তানের সংখ্যা বাড়াতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করছে। জ
চীন, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ, একসময় ‘এক পরিবার, এক সন্তান’ নীতি প্রয়োগ করেছিল। তবে বর্তমানে দেশটি সন্তানের সংখ্যা বাড়াতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চীন সরকার তরুণ প্রজন্মকে সন্তান ধারণে আগ্রহী করতে বিশেষ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস এর এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। বয়স্কদের সংখ্যা বাড়ছে, তরুণদের হার কমছে চীনের ১৪০ কোটি জনগোষ্ঠীর মধ্যে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, কিন্তু তরুণদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাচ্ছে। এর ফলে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। চীন সরকার বুঝতে পারছে, দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনীতি সচল রাখতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ জরুরি। সরকারের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ: বাড়ি বাড়ি ফোন করে উৎসাহ দেওয়া জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য চীনের স্থানীয় প্রশাসন পরিবারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ শুরু করেছে। বিবাহিত নারীদের ফোন করে তাদের সন্তান ধারণের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে সন্তান নেওয়ার জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হচ্ছে। প্রথম এবং দ্বিতীয় সন্তান নেওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ১৪,০০০ ডলার পর্যন্ত আর্থিক সহায়তার ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া, কিছু এলাকায় বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হচ্ছে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেম শেখানোর কোর্স! তরুণদের প্রেম, বিয়ে এবং পরিবার গঠনের প্রতি আগ্রহী করতে চীন সরকার কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘প্রেম শেখানোর কোর্স’ চালু করার প্রস্তাব দিয়েছে। এসব কোর্সের মাধ্যমে বিয়ে এবং সন্তান ধারণের গুরুত্ব তুলে ধরা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমও সন্তান জন্মানোর উপকারিতা নিয়ে সচেতনতামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। পিপলস ডেইলি এবং লাইফ টাইমস এর মতো পত্রিকায় নিয়মিত এসব প্রচারণা চালানো হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতামত তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীনের এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন কঠিন হবে। তরুণ প্রজন্মের অনাগ্রহ, জীবনযাত্রার উচ্চ খরচ, এবং কর্মক্ষেত্রে চাপ সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে বড় বাধা। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ রেন জিপিং বলেন, “চীনের তিনটি বড় সমস্যা হলো—বয়স্ক জনগোষ্ঠীর বৃদ্ধি, জন্মহার কমে যাওয়া, এবং বিবাহের হার হ্রাস।” নারী সংগঠনের দৃষ্টিভঙ্গি নারী অধিকার কর্মী শেন ইয়াং মনে করেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য একক মায়েদের জন্য আরও সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধ করাও জরুরি। ভবিষ্যতের সম্ভাবনা চীন সরকারের এই উদ্যোগ কতটা কার্যকর হবে, তা নির্ভর করছে তাদের নীতিমালা এবং সামাজিক মানসিকতার পরিবর্তনের ওপর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেবল আর্থিক প্রণোদনা নয়, সমাজে ইতিবাচক পরিবেশ গড়েও জনসংখ্যা বৃদ্ধি সম্ভব। চীনের এই উদ্যোগ বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এ নীতি কতটা সফল হবে, সেটাই দেখার বিষয়।
לא נמצאו הערות


News Card Generator