বাংলাদেশের অন্যতম প্রভাবশালী সংগঠন জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন-এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাত ৯টায় রাজধানীতে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে নিজেই এই ঘোষণা দেন তিনি।
স্নিগ্ধ বলেন, “ব্যক্তিগত ও পেশাগত নানা কারণেই আমি এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি। ফাউন্ডেশনের মঙ্গল এবং ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের সুষ্ঠু পরিচালনার স্বার্থেই আমি পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি।”
তবে তার এ পদত্যাগের পেছনে কোনো রাজনৈতিক চাপ, অভ্যন্তরীণ বিরোধ, কিংবা ব্যক্তিগত অসন্তোষ রয়েছে কি না—তা নিয়ে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা। ফাউন্ডেশনের দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেননি।
জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন মূলত শিক্ষা, সামাজিক সচেতনতা এবং দারিদ্র্য বিমোচনে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। গত পাঁচ বছর ধরে এই ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। তার সময়কালে ফাউন্ডেশন ব্যাপক প্রসার ও জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
ভেতরের টানাপোড়েন?
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি ফাউন্ডেশনের অভ্যন্তরে সিদ্ধান্ত গ্রহণ নিয়ে বিভক্তি তৈরি হয়েছিল। বিশেষ করে ফাউন্ডেশনের বার্ষিক বাজেট ও কৌশলগত পরিকল্পনায় মতবিরোধ দেখা দেয়। স্নিগ্ধর পদত্যাগ সেই দ্বন্দ্বেরই প্রতিফলন বলে অনেকে মনে করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে যদিও তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন, “আমি কাউকে দায়ী করতে চাই না। ফাউন্ডেশনের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা অটুট থাকবে।”
কে হবেন নতুন সিইও?
স্নিগ্ধর পদত্যাগের পর এখন সবচেয়ে আলোচিত প্রশ্ন—তার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন কে? এখনো ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। তবে ঘনিষ্ঠ মহল বলছে, নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ে ইতোমধ্যে একটি বোর্ড মিটিং আহ্বান করা হয়েছে। সম্ভাব্য তালিকায় রয়েছেন তিনজন অভিজ্ঞ কর্মকর্তা, যাঁদের মধ্যে একজন নারী।
সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া
স্নিগ্ধর পদত্যাগের খবর প্রকাশিত হওয়ার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড় বয়ে যায়। অনেকেই এই সিদ্ধান্তকে সাহসী বলে আখ্যা দিয়েছেন, আবার অনেকে এটিকে নেতৃত্ব সংকটের সংকেত বলেও উল্লেখ করেছেন।
আগামী দিনের দিকনির্দেশনা
এই মুহূর্তে ফাউন্ডেশন কীভাবে পরিচালিত হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থাপনায় একজন সিনিয়র উপদেষ্টা দায়িত্ব পালন করবেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
তবে প্রতিষ্ঠানের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, “ফাউন্ডেশনের নিয়মিত কার্যক্রম থেমে থাকবে না। শিগগিরই বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে।”
উপসংহার
স্নিগ্ধর পদত্যাগ শুধু একটি দায়িত্ব ত্যাগ নয়—এটি জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের ভবিষ্যৎ গতিপথেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে আলোচনার সূত্রপাত, তা খুব শিগগিরই থেমে যাবে বলে মনে হচ্ছে না।