ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ফের উত্তেজনা: গুজরাটে অনুপ্রবেশে চেষ্টা, বিএসএফের গুলিতে নিহত পাকিস্তানি নাগরিক
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান টানাপড়েনের মধ্যেই এবার গুজরাটের বানাসকাঁঠা জেলায় ভারত-পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সীমান্তে ফের রক্তপাত ঘটলো। শুক্রবার (২৩ মে) সন্ধ্যায় সীমান্তের খুব কাছাকাছি এক পাকিস্তানি নাগরিককে গুলি করে হত্যা করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।
ভারতের কেন্দ্রীয় বাহিনী বিএসএফের দাবি, ওই ব্যক্তি আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের দিকে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। তাঁকে একাধিকবার সতর্ক করা হলেও তিনি থামেননি। এক পর্যায়ে বিএসএফ গুলি চালাতে বাধ্য হয়, এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু ঘটে।
এই ঘটনার খবর প্রকাশ করে ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, যেখানে বলা হয়, নিহত ব্যক্তি একা ছিলেন এবং তার পরিচয় এখনো জানা যায়নি। বিএসএফের এক মুখপাত্র জানান, “সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশের সময় ওই ব্যক্তি বিএসএফ টহল দলের নজরে আসে। বারবার সাবধান করা হলেও তিনি চলতে থাকেন। তখন আমরা বাধ্য হয়ে গুলি চালাই।”
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এই ঘটনার ব্যাপারে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ঘটনা দুই দেশের মধ্যে আগে থেকেই বিরাজমান রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
উত্তেজনাপূর্ণ প্রেক্ষাপট
এ ঘটনা এমন এক সময় ঘটল যখন কাশ্মীরের পেহেলগামে সদ্য সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। গত ২২ মে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে সংঘর্ষে এক ভারতীয় সেনা সদস্য নিহত হন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর হোয়াইট নাইট কর্পস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অভিযানের সময় ওই সেনা সদস্য গুরুতর আহত হন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়।
এই পটভূমিতে গুজরাট সীমান্তে একজন পাকিস্তানি নাগরিকের গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু নতুন করে উস্কে দিচ্ছে নিরাপত্তা ও সামরিক উদ্বেগ। যদিও বিএসএফ একে সীমান্ত সুরক্ষার প্রয়োজনীয় প্রতিরক্ষা পদক্ষেপ হিসেবেই ব্যাখ্যা করছে।
বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে উদ্দেশ্য
নিহত ব্যক্তির পরিচয় বা সীমান্তে প্রবেশের উদ্দেশ্য সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। তিনি কি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন, না কি ভুল করে সীমান্ত অতিক্রম করেছেন—তা নিয়েও চলছে জল্পনা। বিএসএফ সূত্রে বলা হয়েছে, এ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং উচ্চ পর্যায়ের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করছে।
সমাপ্তি কথা
সীমান্তে এমন ঘটনা দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা কমার বদলে আরও বাড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কূটনৈতিকভাবে দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ কার্যত বন্ধ বললেই চলে। তাই এমন হত্যাকাণ্ড উভয় পক্ষের মধ্যে দোষারোপ আর রাজনৈতিক চাপ বাড়ানোর কারণ হয়ে দাঁড়াবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।