close
কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!
চুয়াডাঙ্গা, ২০ জানুয়ারি: শীতের তীব্রতায় কাঁপছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গা। গত কয়েকদিনের শীতল বাতাস ও কুয়াশার কারণে জনজীবন থমকে গেছে। সকাল ৯টায় তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে, যা পূর্বের ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। এ অঞ্চলে বর্তমানে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে এবং তীব্র শীতে খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।
কনকনে ঠান্ডায় বিপদে জনজীবন
বুধবার (২০ জানুয়ারি) সকাল ৬টায় চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হিসেবে রেকর্ড হয়েছে। আবহাওয়ার প্রকোপে ভোরের কুয়াশা ও হিমেল বাতাস শহর ও গ্রামের জীবনযাত্রাকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। এমন পরিস্থিতিতে গরম কাপড়ের ওপর আচ্ছাদন নিতে বাধ্য হচ্ছে মানুষ, কিন্তু ঠান্ডার মাত্রা এতটাই বেশি যে অনেকেই কাঁপতে কাঁপতে তাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। খেটে খাওয়া মানুষদের জন্য এটি এক ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষত যারা খোলা আকাশের নিচে কাজ করেন।
বৈশ্বিক শীতকালীন চ্যালেঞ্জ
চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের বিভিন্ন শ্রমিকরা জানিয়েছেন, ঠান্ডার কারণে তাদের কাজকর্ম অনেকটাই ব্যাহত হচ্ছে। বোরো ধান লাগানোর শ্রমিক বিল্লাল হোসেন বলেন, "কাদা পানিতে কাজ করা এখন অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। শীতের কারণে শরীর ও মনের ওপর এর প্রভাব পড়ছে।" অন্যদিকে, ভ্যানচালক সাদেক আলী জানিয়েছেন, "কিছুদিন শীত কিছুটা কম ছিল, তবে আজ আবার তীব্র ঠান্ডা পড়েছে। ভ্যান চালানো এখন কষ্টকর হয়ে উঠেছে।"
প্রতিবাদী শীতে সরকারের উদ্যোগ
জেলা ত্রাণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, শীতের তীব্রতা মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে ১০ হাজার কম্বল পাওয়া গেছে, যা শীতার্ত মানুষদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়াও, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এই অর্থ চারটি উপজেলার ইউএনওদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, যাদের মাধ্যমে শীতবস্ত্র (কম্বল) সংগ্রহ করে বিতরণ করা হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গায় শীতের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ মো. জামিনুর রহমান জানিয়েছেন, আগামী কয়েকদিন এ অঞ্চলে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে। তবে, ২৬ জানুয়ারি থেকে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে, কিন্তু তারপর আবারও শীতের প্রকোপ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি জানান, শীতের এই সময়ে আরও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, বিশেষত দুর্বল ও অসুস্থ মানুষের জন্য।
অপরিকল্পিত শীতকালে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া উচিত
এখানে বলা যায়, শীতের মৌসুমে যদি যথাযথ পরিকল্পনা ও ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তবে আরও বিপদ সৃষ্টি হতে পারে। সরকারের পাশাপাশি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সমাজের সবাইকে এই দুর্দিনে শীতবস্ত্র বিতরণ ও সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া উচিত। চুয়াডাঙ্গার মানুষদের এই বিপদের মধ্যে একে অপরকে সহায়তা করতে হবে, যাতে তারা শীতকালীন দুর্ভোগ কাটিয়ে উঠতে পারে।
এখানে শীতের দুর্দিন, কিন্তু সাহসী চুয়াডাঙ্গার মানুষের সংগ্রাম অব্যাহত
চুয়াডাঙ্গার শীতের এই পরিস্থিতি কেবল দুর্দিন নয়, বরং এখানকার মানুষের সাহস, সহমর্মিতা এবং একত্রিতভাবে সমস্যা মোকাবিলার প্রতীক। যতটা শীত, ততটা মানুষের সহানুভূতি ও সহায়তা—এটাই এখন চুয়াডাঙ্গার মানুষদের শক্তি।
Tidak ada komentar yang ditemukan