close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ কুষ্টিয়ায় গ্রেপ্তার..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ভোররাতের নিঃশব্দ অভিযানে সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়ল দেশের দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ। কুষ্টিয়ার ভাড়া বাসা থেকে গ্রেফতার, উদ্ধার হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি। বিকেলে আসছে আনুষ্ঠানিক বিব..

সেনাবাহিনীর নাটকীয় অভিযানে গ্রেফতার হল দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী মোল্লা মাসুদ। মঙ্গলবার (২৭ মে) ভোর রাতে কুষ্টিয়া শহরের কালিশংকরপুর এলাকার সোনার বাংলা সড়কের একটি ভাড়া বাসা থেকে তাদের আটক করে সেনাবাহিনীর একটি দক্ষ ও গোপনীয় অপারেশনাল দল।

গ্রেফতার অভিযানটি পরিচালিত হয় একেবারে নিঃশব্দে ও দ্রুতগতিতে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভোররাতের নীরবতা ভেঙে আচমকাই সেনাবাহিনীর গাড়ি ও সদস্যরা হাজির হন কালিশংকরপুরের একটি তিনতলা বাড়িতে। বাড়িটি কিছুদিন আগে ভাড়া নিয়েছিল দুই যুবক, যারা এলাকায় খুব একটা পরিচিত ছিলেন না। রাতের অন্ধকারে বেশিরভাগ সময়েই তারা বাইরে থাকতেন এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে খুব একটা মিশতেন না।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, দেড় মাস আগে মৃত মীর মহিউদ্দিনের বাড়ির পেছনের একটি অংশ ভাড়া নেয় ওই দুই যুবক। তারা নিচ তলায় থাকতেন এবং প্রায়ই রাত গভীরে বাসায় ফিরতেন।

সেনাবাহিনী সূত্রে জানা যায়, গোপন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানকালে তাদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয় দুটি পিস্তল, চারটি ম্যাগাজিন এবং ১০ রাউন্ড গুলি।

আইএসপিআর (আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর) বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, অভিযানের পরপরই দুই সন্ত্রাসীকে কড়া নিরাপত্তায় ঢাকা নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে বিকেল ৫টায় আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করা হবে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই গ্রেফতার দেশের নিরাপত্তা ও অপরাধ দমন কার্যক্রমে এক বড় অগ্রগতি। সুব্রত বাইন বহুদিন ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর 'মোস্ট ওয়ান্টেড' তালিকায় ছিল। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক হত্যা, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মামলা। অপরদিকে মোল্লা মাসুদকেও একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সক্রিয় সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে গোয়েন্দা সংস্থা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অভিযান প্রমাণ করে যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় কতটা সচেষ্ট ও প্রস্তুত। তারা শীর্ষ সন্ত্রাসীদেরও গোপনে চিহ্নিত করে অত্যন্ত কৌশলে গ্রেফতার করতে সক্ষম।

জনমনে প্রশ্ন উঠছে, দেশের ভেতরে এইসব শীর্ষ সন্ত্রাসীরা কীভাবে নিরাপদ আশ্রয় পায়, কীভাবে তারা অস্ত্র মজুত করে এবং কীভাবে দীর্ঘদিন আইনের হাত এড়িয়ে চলতে পারে। বিশেষ করে কুষ্টিয়ার মতো একটি শহরে এমন ঘটনা গোটা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর একটি প্রশ্নচিহ্ন তুলে দেয়।

এই গ্রেফতারির পর এলাকাবাসীর মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। অনেকেই বলছেন, তারা বুঝতেই পারেননি এত বড় অপরাধী তাদের আশপাশে ছিল। সেনাবাহিনীর হঠাৎ আগমন এবং সুনির্দিষ্ট ও সফল অভিযান স্থানীয়দের মধ্যে নিরাপত্তার আস্থা ফিরিয়ে এনেছে।

এখন সবার নজর বিকেলের সংবাদ সম্মেলনের দিকে, যেখানে আইএসপিআর এই অভিযান ও গ্রেফতার সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জানাবে। এতে উন্মোচিত হতে পারে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য, এবং জানা যেতে পারে এই দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীর ভবিষ্যত পরিকল্পনার দিকেও।

কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি