আজ শনিবার গোপালগঞ্জ শহরের বিসিক শিল্প এলাকায় অনুষ্ঠিত জামায়াতে ইসলামীর ইউনিট দায়িত্বশীল সম্মেলনে দলটির কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ ও নৈতিক নিরাপত্তা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের জন্য ইসলামী ছাত্রশিবির ও ইসলামী ছাত্রী সংস্থা সবচেয়ে নিরাপদ সংগঠন। যারা সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত, তারা এই দুটি সংগঠনকে নিশ্চিন্তে বেছে নিতে পারেন।”
তিনি আরও বলেন, “আপনার ছেলে যদি শিবিরে যুক্ত হয়, তবে সে কখনোই নেশাগ্রস্ত হবে না, রাস্তার মেয়েদের উত্যক্ত করবে না, কিংবা কোনো অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়াবে না। শিবির একজন শিক্ষার্থীকে আদর্শ মানুষ ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে।”
শিক্ষার ক্ষতি হয় না বরং চরিত্র গঠনের মাধ্যম হয় বলেও দাবি করেন তিনি। “আপনার ছেলে যদি শিবির করে, তাহলে রেজাল্ট খারাপ হবে না—এই নিশ্চয়তা আমরা দিতে পারি,”—জানান রফিকুল।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “এতগুলো নিশ্চয়তা কোনো অভিভাবক যদি পায়, তাহলে সন্তানকে সেই আন্দোলনের অংশ না করে কি আমরা নিজেরাই দুর্ভাগা হয়ে থাকি না?” তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যাদের ছেলে ক্লাস ফাইভের ওপরে, তাদের শিবিরে দেন। আর যাদের মেয়ে ফাইভের ওপরে, তাদের ছাত্রী সংস্থায় দিন।”
রফিকুল ইসলাম খান তাঁর বক্তব্যে জামায়াতের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “যদি বাংলাদেশের মানুষ জামায়াতকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দেয়, তাহলে জামায়াত কখনো রাজা হবে না, জনগণকে প্রজা বানাবে না। বরং আমরা হব দেশের মানুষের সেবক। শাসক নয়, সেবক হিসেবে কাজ করাই আমাদের মূলনীতি।”
তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, “জামায়াত ক্ষমতায় এলে দেশে থাকবে না চাঁদাবাজ, থাকবে না দুর্নীতিবাজ কিংবা জমি দখলবাজ। জামায়াত হবে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও দুর্নীতিমুক্ত সংগঠন।”
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন গোপালগঞ্জ জেলা আমির অধ্যাপক রেজাউল করিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ফরিদপুর জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা বদরুদ্দিন, গোপালগঞ্জের সাবেক জেলা আমির অ্যাডভোকেট আজমল হোসেন সরদারসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এ সম্মেলনের মাধ্যমে জামায়াত নেতারা দলীয় কাঠামো ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিবির-সংস্থা’র ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
তাঁদের দাবি, ভবিষ্যতের নেতৃত্ব তৈরি করতে হলে এখনই ছাত্রসমাজকে আদর্শিক ও শৃঙ্খলিত সংগঠনের মাধ্যমে গড়ে তোলা জরুরি।
এজন্যই তাঁরা অভিভাবকদের সন্তানদের শিবির ও ছাত্রী সংস্থায় যুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।



















