close
কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!
ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেমেছে মানুষের ঢল। শুক্রবার ভোর থেকেই হাজারো মানুষ সমবেত হয়েছেন শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে। কণ্ঠে ভাইহারা গান, হাতে শ্রদ্ধার ফুল—সব বয়সের মানুষ যেন এক প্রাণ হয়ে এসেছেন ভাষা শহীদদের প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা জানাতে।
প্রভাতফেরি থেকে শুরু করে শহীদ বেদীতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ পর্যন্ত পুরো প্রাঙ্গণ ভরে ওঠে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের পদচারণায়। রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পাশাপাশি শিক্ষার্থী, অভিভাবক, বৃদ্ধ ও শিশুরাও অংশ নেয় এই শ্রদ্ধা নিবেদনে। বাবামায়ের হাত ধরে ছোট ছোট শিশুরাও এসেছে শহীদদের প্রতি ভালোবাসা জানাতে।
সবাই এক কণ্ঠে উচ্চারণ করেছেন বৈষম্যহীন ও মানবিক বাংলাদেশের স্বপ্ন। প্রত্যাশা করেছেন, অমর একুশের চেতনা প্রেরণা হয়ে সমাজের সকল স্তরে ন্যায় ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত করবে। একইসঙ্গে সবার মধ্যে ছিল শুদ্ধ বাংলা ভাষা চর্চার তাগিদ।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রবেশের জন্য ব্যবহার করা হয় পলাশী মোড়, আর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর মানুষ বেরিয়ে যান চাঁনখারপুল ও কার্জন হলের দিক দিয়ে।
রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধা: মধ্যরাতে শুরু
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি নীরব হয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও শহীদ বেদীতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন এবং নীরবে কিছু সময় দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এরপর একে একে শ্রদ্ধা জানান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও অন্যান্য বিচারকবৃন্দ। তিন বাহিনী প্রধান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ. এম. এম. নাসির উদ্দিন ও অন্যান্য কমিশনারবৃন্দও ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পুলিশের আইজিপি, ডিএমপি কমিশনার, আনসার, বিজিবি, র্যাব, এনএসআই ও ডিজিএফআই-এর মহাপরিচালকগণ।
সবার জন্য উন্মুক্ত শহীদ মিনার
রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয় শহীদ মিনার। এরপর রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ ভাষা শহীদদের স্মরণ করে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও অমর একুশে উদযাপন কমিটির সদস্যরাও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর একের পর এক মানুষের সারি শহীদ মিনারে পৌঁছে ভাষা শহীদদের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান জানায়।
একুশের প্রেরণায় আগামীর বাংলাদেশ
ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের স্মরণে এ দিনের আবেগ ছড়িয়ে পড়ে গোটা বাংলাদেশে। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জড়ো হওয়া মানুষের মুখে একটাই প্রত্যাশা—একুশের চেতনায় গড়ে উঠুক বৈষম্যহীন ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।
শুদ্ধ ভাষার চর্চা, সব স্তরে ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা ও মানবিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটুক এই অমর একুশের অঙ্গীকারে।
Inga kommentarer hittades



















