সচিবরা জুলাইয়ের বিরুদ্ধে নেমেছেন, কপালে শনি আছে’

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সরকারি চাকরি আইনে সংশোধনী এনে জারি করা অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে টানা তিন দিনের বিক্ষোভে উত্তাল সচিবালয়। কর্মচারীরা সরাসরি সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন—আজই সিদ্ধান্ত না এলে চলবে অচলাবস্থা। এই আন্দোলন কি সর..

সরকারি চাকরি আইনে সংশোধনী এনে নতুন করে জারি করা একটি অধ্যাদেশকে কেন্দ্র করে ফুঁসে উঠেছে সচিবালয়ের কর্মচারীরা। গত তিন দিন ধরে সচিবালয়ের চত্বর যেন পরিণত হয়েছে এক অঘোষিত আন্দোলনের মঞ্চে। রবিবার ও সোমবারের পর আজ সোমবার দুপুর থেকে কর্মচারীদের উপস্থিতি আরও ঘনীভূত হয়।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সচিবালয়ের প্রায় সব গেটে দেখা যায় শত শত কর্মকর্তা-কর্মচারীকে। প্ল্যাকার্ড হাতে, স্লোগানে মুখর তারা বলছেন— "এই আইন আমাদের বিরুদ্ধে, আমরা মানি না, মানব না।" দাবি একটাই— অবিলম্বে অধ্যাদেশ বাতিল করতে হবে।

আজ সোমবার বিকেল ৪টার মধ্যে কোনো সিদ্ধান্ত না এলে আরও কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা আসবে—এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও অবস্থান নিয়েছে সতর্কতায়। সচিবালয়ের ১, ২ ও ৪ নম্বর গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। সাধারণ প্রবেশাধিকার সীমিত করে দেওয়া হয়েছে, যাতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত না হয়।

এই প্রেক্ষাপটে একজন সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,
"এটা শুধু চাকরি বাঁচানোর লড়াই নয়, এটা মর্যাদা রক্ষারও লড়াই।"

আন্দোলনের পেছনের কারণ:

সরকার সম্প্রতি যে অধ্যাদেশটি জারি করেছে, তাতে সরকারি চাকরিজীবীদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে আগে অনুমোদন নিতে হবে। অনেকের মতে, এটি হয়রানিমূলক ও চাকরি নিরাপত্তার পরিপন্থী।

এই সংশোধনীতে ‘জুলাইয়ের’ নামও ঘুরে ফিরে এসেছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী জুলাই মাস থেকেই নতুন নিয়ম কার্যকর হতে পারে। তাই আন্দোলনকারীরা বলছেন, "জুলাইয়ের কপালে শনি আছে।"

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া:

নতুন নাগরিক প্ল্যাটফর্ম (এনসিপি) নেতা রিফাত রশীদ আজ দুপুরে নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে বলেন,
"যারা সংস্কারকে রুখে দাঁড়ায়, তারা মূলত নিজের সুবিধা বাঁচাতে চায়।"
তার এই মন্তব্যে স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে—সচিবালয়ের এই আন্দোলন সংস্কারবিরোধী মনোভাব থেকে উৎসারিত।

 

বিশ্লেষকদের মতে, দেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের দাবি থাকলেও বাস্তবে খুব কম পদক্ষেপই নেওয়া হয়। এই ধরনের আন্দোলন সংস্কারের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

তবে অনেকেই এটিকে দেখছেন চাকরি ও পেনশন–নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন এক বড় শ্রেণির ‘নীরব বিদ্রোহ’ হিসেবে।

প্রশ্ন উঠেছে—সরকার কি তাদের কথা শুনবে? নাকি মুখোমুখি সংঘর্ষের পথে যাবে?

 

সচিবালয়ের কর্মচারীদের আন্দোলন এখন কেবল একটি দাবিতে সীমাবদ্ধ নয়, এটি হয়ে উঠেছে একটি প্রতীক—প্রশাসনের ভেতরের ক্ষোভ, হতাশা ও নিরাপত্তাহীনতার প্রতিচ্ছবি।

আজ বিকেল ৪টার পর কী হয়, সেটিই নির্ধারণ করবে আগামী দিনে সচিবালয় ও প্রশাসনিক ভবিষ্যৎ কোন পথে হাঁটবে।

Không có bình luận nào được tìm thấy


News Card Generator