close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

সাগর পথে মায়ানমারে সিমেন্ট পাচার থামানো যাচ্ছে না

Nazrul Islam avatar   
Nazrul Islam
নজরুল ইসলাম, কুতুবদিয়া:

বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় নিয়মিত অভিযান, বোট জব্দ ও চোরাকারবারি আটক সত্ত্বেও সাগর পথে মায়ানমারে সিমেন্ট পাচার থামানো যাচ্ছে না। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাচারের কৌশল আরও সংগঠিত ও ভয়ংকর হয়ে উঠছে বলে সংশ্লিষ্টদের দাবি।
সম্প্রতি কুতুবদিয়া বহিঃনোঙর এলাকা থেকে ১ হাজার ৭৫০ বস্তা সিমেন্টসহ দুটি বোট ও ২৩ জন পাচারকারীকে আটক করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। এ ঘটনায় আবারও সামনে এসেছে সাগর পথে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সিমেন্ট পাচারের একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্কের অস্তিত্ব। তবে এর আগেও বেশ কয়েকবার অপরাধিদের বোটসহ আটক করা হয়েছে। কিন্তু রা্জনৈতিক ছত্রছায়ায় আইনের ফাঁকফোকরে পারপেয়ে আরও বেপরোয়া হয়েছে এ পাচার চক্র।
সূত্র জানায়, কক্সবাজারের কুতুবদিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী ও সেন্টমার্টিন সংলগ্ন সাগর এলাকা সিমেন্ট পাচারের প্রধান রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। দেশীয় বাজারে স্বল্প দামে কেনা সিমেন্ট রাতের আঁধারে ইঞ্জিনচালিত কাঠের বোটে তুলে মায়ানমারের বিভিন্ন উপকূলে পাচার করা হয়। এতে শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার পাশাপাশি পাচারকারীরা বিপুল অঙ্কের মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দুর্গম সমুদ্রপথ ও সীমিত নজরদারি পাচারকারীদের বড় সুবিধা দিচ্ছে। স্থানীয় সহযোগী ও তথ্যদাতা চক্র অভিযানের আগেই পাচারকারীদের সতর্ক করে দিচ্ছে।অনেক ক্ষেত্রে বৈধ মালামালের আড়ালে অবৈধ পাচার করা হচ্ছে, যা শনাক্ত করা কঠিন।জব্দ হলেও অনেক পাচারকারী জামিনে বের হয়ে আবার একই কাজে জড়িয়ে পড়ছে।
একাধিক স্থানীয় জেলে জানান, কিছু বোট নিয়মিত একই রুটে যাতায়াত করলেও রহস্যজনকভাবে তারা দীর্ঘ সময় ধরা পড়ে না। এতে করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিমেন্ট পাচার শুধু রাজস্ব ক্ষতির কারণ নয়, এটি সীমান্ত নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্যও হুমকি। পাচার চক্রের সঙ্গে ভবিষ্যতে মাদক বা অস্ত্র পাচারের মতো ভয়াবহ অপরাধ যুক্ত হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড সূত্রে জানা গেছে, সমুদ্র এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান আরও বাড়ানো হবে। তবে সংশ্লিষ্টদের মতে, শুধু অভিযান নয়-পাচারের অর্থনৈতিক উৎস, স্থানীয় সহযোগী এবং আইনি ফাঁকফোকর চিহ্নিত করে সমন্বিত ব্যবস্থা না নিলে সাগর পথে সিমেন্টসহ মাদকদ্রব্য পাচার পুরোপুরি বন্ধ করা কঠিনই থেকে যাবে।
সামুদ্রিক সীমান্তে এই অব্যাহত পাচার এখন শুধু আইনশৃঙ্খলা নয়, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে-যার কার্যকর সমাধান জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।

Geen reacties gevonden


News Card Generator