close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল ৩ দিনের রি মা ন্ডে

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রহসনের নির্বাচন, ভোটাধিকার হরণ ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল ৩ দিনের রিমান্ডে। উঠে এসেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ ক্ষমতাবানদের চাঞ্চল্যকর নাম।..

বাংলাদেশের নির্বাচন ইতিহাসে এক চাঞ্চল্যকর অধ্যায় যুক্ত হলো বৃহস্পতিবার, যখন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তারের পর ৩ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেয় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত।

রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে বুধবার সকালে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। দীর্ঘদিন ধরেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছিল যে তিনি ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে “দিনের ভোট রাতে” করাসহ বিভিন্ন অনিয়মে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করেছেন।

এই প্রেক্ষিতে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন খান একটি মামলা দায়ের করেন, যাতে রাষ্ট্রদ্রোহ ও ভোটাধিকার হরণসহ নানা গুরুতর অভিযোগ আনা হয়। মামলায় মোট ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে, যার মধ্যে তিনজন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারও রয়েছেন — ২০১৪ সালের নির্বাচনের সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, ২০১৮ সালের সিইসি কে এম নূরুল হুদা এবং ২০২৪ সালের সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল।

পুলিশ হাবিবুল আউয়ালের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলেও আদালত প্রাথমিকভাবে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এর আগে, একই মামলায় গ্রেপ্তার হন সিইসি কে এম নূরুল হুদা, যাকে সোমবার আদালত ৪ দিনের রিমান্ডে পাঠান।

আরও বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, এই মামলায় শুধু নির্বাচন কমিশনাররাই নন, বরং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার, জাবেদ পাটোয়ারী এবং এ কে এম শহীদুল হকের নামও আসামির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

মামলায় রাষ্ট্রদ্রোহের ধারা যুক্ত করার আবেদন করলে বুধবার আদালত সেটিও অনুমোদন করে, যা মামলাটিকে আরও জটিল এবং উচ্চমাত্রার করে তোলে। রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে — ফলে এই মামলাটি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের মামলা দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন। নির্বাচন কমিশনের মতো সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের সাবেক প্রধানদের বিরুদ্ধে এমনভাবে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা নতুন প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।

বিএনপি বলছে, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম, ভোট ডাকাতি, ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। এই কারণে জনগণের পক্ষ থেকে বিচার দাবির স্বার্থেই মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সরকারপক্ষের কেউ এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমেই বাড়ছে।

এই মামলার পরবর্তী শুনানি ও তদন্ত অগ্রগতি কী হয়, তা দেশের রাজনীতি ও বিচারব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্ধারণ করবে বলেই বিশ্লেষকদের মত।

Nema komentara