আসন্ন রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করে দেশে একটি ইতিবাচক রাজনৈতিক দৃষ্টান্ত স্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও প্রবীণ নেতা জয়নুল আবদীন ফারুক। তিনি বলেছেন, ‘আর দেরি নয়—জনগণের প্রত্যাশা পূরণে নির্বাচন দরকার এখনই। সময় চলে গেলে আস্থা ফিরে আসবে না।’
শুক্রবার (২৭ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক নাগরিক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ নির্বাচন নিয়ে হতাশায় ডুবে আছে। কিন্তু আমরা আশাবাদী—লন্ডনে শেষ বৈঠকের পর সব ষড়যন্ত্রের কুয়াশা কেটে গেছে। এখন আর কোনো গোপন খেলা চলবে না।’
ফারুক আরও বলেন, ‘বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদের আমলে এরশাদ সরকারের পতনের পর মাত্র তিন মাসেই সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছিল। সেই উদাহরণই আজ আমাদের সামনে। আজ যদি প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস সাহসিকতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে তিনিও জাতির ইতিহাসে একটি স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক নাম হিসেবে জায়গা করে নিতে পারেন।’
শুধু নির্বাচন নয়—ফারুক রাজনৈতিক সংস্কৃতির সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারের কথাও জোর দিয়ে বলেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের মাধ্যমে যদি গণতন্ত্র ফিরে আসে, তাহলে সর্বাগ্রে সংস্কার দরকার শিক্ষা খাতে। কারণ, একটি জাতির মেরুদণ্ডই যদি ভেঙে যায়, তাহলে উন্নয়ন কেবল কথার খেলাই হয়ে দাঁড়ায়।
তিনি সরাসরি অভিযোগ করে বলেন, ‘ডা. দীপু মনির আমলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। শেখ হাসিনা এবং তার পিতা শেখ মুজিবুর রহমান যেভাবে শিক্ষা ব্যবস্থাকে রাজনীতিকরণ করেছেন, তা সত্যিই দুঃখজনক।
ফারুক বলেন, ‘আমাদের দেশে যারা দিনের পর দিন গণতন্ত্রের বুলি আওড়ান, তারা কখনো শিক্ষা উন্নয়নের কথা বলেন না। অথচ শিক্ষা ছাড়া কোনো সমাজ, কোনো দেশ এগোতে পারে না। এই অযত্নে শিক্ষাখাত আজ ধ্বংসের মুখে।’
তিনি আরও জানান, বিএনপি জনগণের ভোটাধিকার ও স্বাধীনতার প্রশ্নে কখনো আপস করবে না। ‘গণতন্ত্র ফেরাতে হলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, প্রাক-রমজান নির্বাচন এখন সময়ের দাবি।’
ফারুকের বক্তব্যে স্পষ্ট যে, রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে একমাত্র পথ হলো অবিলম্বে নির্বাচন। এখন দেখার বিষয়, সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস এই চ্যালেঞ্জকে কীভাবে গ্রহণ করেন। তিনি কি সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে জাতির সামনে ইতিহাস গড়বেন, নাকি অনিশ্চয়তার অন্ধকারেই দেশকে ডুবিয়ে রাখবেন?