close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

রিমান্ড শেষে সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল কারাগারে

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রহসনের নির্বাচনের অভিযোগে তিন দিনের রিমান্ড শেষে সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়ালকে কারাগারে পাঠালেন আদালত। মামলায় সাবেক তিন সিইসি সহ অভিযুক্ত ২৪ জন।..

প্রহসনের নির্বাচন পরিচালনার অভিযোগে দায়েরকৃত রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে আজ কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। আজ রবিবার (১৯ জুন) দুপুরের পর তাঁকে আদালতে হাজির করা হয় এবং শুনানি শেষে এই আদেশ দেন বিচারক।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা মামলায় হাবিবুল আউয়ালের বিরুদ্ধে ‘প্রহসনের নির্বাচন’ আয়োজনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ এবং রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। ২৬ জুন আদালত এই মামলায় হাবিবুল আউয়ালের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। সেই রিমান্ড শেষে আজ দুপুর ১২টার দিকে তাঁকে আদালতের হাজতখানায় আনা হয়।

গত বুধবার রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার আগেই এই মামলায় আরও দুই সাবেক সিইসির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান চালানো হয়। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা তিন সাবেক সিইসি—কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কে এম নূরুল হুদা এবং সর্বশেষ হাবিবুল আউয়াল—তিনজনকেই এই মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।

এই মামলার বাদী বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন খান। তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে থেকেও জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিতে ব্যর্থ হয়েছেন, বরং ভোট কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচনের প্রহসন পরিচালনা করে তাঁরা গণতন্ত্র ও সংবিধানকে উপহাস করেছেন।

এছাড়া মামলায় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পুলিশ প্রধান হাসান মাহমুদ খন্দকার, জাবেদ পাটোয়ারী, এ কে এম শহীদুল হকসহ আরও ২৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে সরকার ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে দিনের ভোট রাতে করেছে, ব্যালট বাক্স ভর্তি করা হয়েছে আগেই, এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে কারসাজির মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত করেছে।

রোববার হাবিবুল আউয়ালকে আদালতে হাজির করার পর, পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে। অপরদিকে আসামিপক্ষ থেকে জামিন চাওয়া হলে, আদালত উভয় পক্ষের শুনানি গ্রহণ করে জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এই মামলায় অন্য দুই সিইসি—কে এম নূরুল হুদা এবং কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের বিরুদ্ধেও আদালত ইতোমধ্যে রিমান্ড আদেশ দিয়েছেন। নূরুল হুদাকে গত রোববার গ্রেপ্তার করা হয় এবং আদালত সোমবার তাঁর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে শুক্রবার আরও চার দিনের রিমান্ড বাড়ানো হয়।

এমন ঘটনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিরোধীদল একে একটি “বিচার ও জবাবদিহিতার জয়” হিসেবে দেখলেও, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

বিএনপির নেতারা বলছেন, যারা নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে, আজ তারাই আইনের মুখোমুখি হচ্ছে—এটি জনগণের বিজয়।

এই মামলার বিচারকাজ কীভাবে এগোয়, এবং এর ফলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কী প্রভাব পড়ে—তা এখন দেখার বিষয়। তবে দেশের ইতিহাসে এই প্রথমবার, একাধিক সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার ও কারাগারে পাঠানো হলো।

No comments found


News Card Generator