close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

রেস্তোরাঁ নয়, যেন বিয়েবাড়ি! নারায়ণগঞ্জে আসলাম মিয়ার বিরিয়ানির রাজত্ব

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে এক ব্যতিক্রমী আয়োজন! রেস্তোরাঁর সাধারণ পরিবেশের বদলে বিয়েবাড়ির আদলে শামিয়ানা ও প্যান্ডেল সাজিয়ে জমজমাট বিরিয়ানি বিক্রির ধুম লেগেছে। স্থানীয়দ
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে এক ব্যতিক্রমী আয়োজন! রেস্তোরাঁর সাধারণ পরিবেশের বদলে বিয়েবাড়ির আদলে শামিয়ানা ও প্যান্ডেল সাজিয়ে জমজমাট বিরিয়ানি বিক্রির ধুম লেগেছে। স্থানীয়দের পাশাপাশি দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসছেন এই বিশেষ আয়োজন উপভোগ করতে। আর এর পেছনে রয়েছেন আসলাম মিয়া, যাঁর হাতের বিরিয়ানির স্বাদ ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলেছে সর্বত্র। বিয়েবাড়ির মতো পরিবেশ, অথচ এটি শুধুই এক বিরিয়ানির দোকান! সোমবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার বুরুন্দি এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, প্যান্ডেল টাঙিয়ে চেয়ার-টেবিল সাজিয়ে ক্রেতাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে এক ব্যতিক্রমী আয়োজন। রীতিমতো বিয়েবাড়ির পরিবেশ, আর তার মধ্যেই উপচে পড়া ভিড়। লোকজন দল বেঁধে এসে আয়েশ করে খাচ্ছেন গরম গরম বিরিয়ানি। পাশেই বড় বড় ডেগ বসিয়ে বিরিয়ানি রান্না চলছে একের পর এক। ‘আসলাম বিরিয়ানি হাউস’ নামের দোকান থেকে ফুল প্লেট বিরিয়ানি ৩০০ টাকা, হাফ প্লেট ২০০ টাকা এবং কোয়াটার প্লেট ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সঙ্গে থাকছে সালাদও। স্বাদে অতুলনীয়! দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন ক্রেতারা নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ থেকে বিরিয়ানি খেতে এসেছেন সেলিম আহমেদ ডালিম। তিনি বলেন, ‘গ্রামীণ পরিবেশে এমন আয়োজন সত্যিই দারুণ। প্রথম দেখাতেই মনে হবে যেন কোনো বিয়েবাড়ির আয়োজন চলছে। আর স্বাদ? অসাধারণ! একবার খেলেই মনের মধ্যে গেঁথে যায়।’ শহরের সৈয়দপুর এলাকা থেকে আসা জিহাদ হোসেন বলেন, ‘প্রতি প্লেটে ১৫-১৬টি মাংসের টুকরো পাওয়া যায়, যা সাধারণত অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। খাবারের পরিমাণও এত বেশি যে, এক প্লেট খেলেই পেট ভরে যায়।’ এমনকি বসার জায়গা না পেয়ে কেউ কেউ অটোরিকশায় বসেও বিরিয়ানি খাচ্ছেন। সুদূর মেঘনা থেকে আসা ইয়াজ আহমেদ বলেন, ‘২০০ টাকার মধ্যে এত ভালো বিরিয়ানি আর কোথাও খাওয়া যায় না। স্বাদের দিক থেকেও অনন্য। সে কারণেই এত দূর থেকে আসতে দ্বিধা হয়নি।’ বিরিয়ানির রহস্য: আসলাম মিয়ার জাদুকরি হাতের ছোঁয়া! এই বিরিয়ানি তৈরির পেছনে যিনি মূল কারিগর, তিনি হলেন বাবুর্চি মো. সামসুদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমাদের মালিক আসলাম ভাইয়ের হাতে এক ধরনের জাদু আছে! উনার তৈরি খাবার অতুলনীয়। বিরিয়ানিতে সাধারণ মসলাই ব্যবহার করা হয়, তবে পরিমাণ এবং রান্নার ধরণটাই একে অনন্য করে তোলে।’ ‘আসলাম বিরিয়ানি হাউস’-এর মালিক ও প্রধান বাবুর্চি আসলাম মিয়া বলেন, ‘আমার দোকানের খাবারের মান সবসময় ভালো থাকে বলেই এত ভিড়। ক্রেতাদের চাপ সামলাতে দোকানের পাশে প্যান্ডেল টাঙিয়ে চেয়ার-টেবিলে খাবার পরিবেশন করা হয়। কেউ বসে খায়, কেউ আবার পার্সেল নিয়ে যায়।’ প্রতিদিন লাখ টাকার বিক্রি! ১৯৯৮ থেকে বিরিয়ানির রাজত্ব প্রতিদিন ৫-৭ ডেগ বিরিয়ানি রান্না করা হয়। ছোট ডেগে ৩৫ কেজি গরুর মাংস ও ২২ কেজি চাল, আর বড় ডেগে ৪০ কেজি গরুর মাংস ও ২৩ কেজি চাল ব্যবহার করা হয়। প্রতিদিন ৪-৫ মণ গরুর মাংসের প্রয়োজন হয়। সকাল ৬টা থেকে শুরু হয় রান্নার কাজ, চলে বিকেল পর্যন্ত। আসলাম মিয়া জানান, প্রতিদিন গড়ে ১ লাখ ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকার বিরিয়ানি বিক্রি হয়। ১৯৯৮ সালে মাত্র তিন কেজি চাল দিয়ে শুরু করা ব্যবসা এখন বিরাট পরিসরে পৌঁছে গেছে। সীমিত লাভে বিরিয়ানি বিক্রি করায় ক্রেতাদের ভিড় সবসময় লেগেই থাকে। শেষ কথা ‘আসলাম বিরিয়ানি হাউস’ এখন শুধু এক রেস্তোরাঁ নয়, এটি এক অভিজ্ঞতা! বিয়েবাড়ির মতো সাজিয়ে বিরিয়ানি পরিবেশন, সুস্বাদু স্বাদ, আর দামটাও হাতের নাগালে—সবমিলিয়ে এটি বিরিয়ানিপ্রেমীদের জন্য স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। আপনি কি বিরিয়ানির ভক্ত? তাহলে একবার ঘুরে আসতে পারেন নারায়ণগঞ্জের এই ব্যতিক্রমী আয়োজন থেকে!
Nenhum comentário encontrado


News Card Generator