close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

পুলিশ ভ্যানে হাম'লা: ছাত্রদল নেতাকে ছিনিয়ে নিলেন শ্রমিক দল নেতা!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় প্রকাশ্য দিবালোকে পুলিশের গাড়ির গতিরোধ করে ছাত্রদল নেতাকে ছিনিয়ে নেন শ্রমিক দলের এক নেতা। পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধা এবং জমি দখলের অভিযোগে দফায় দফায় মামলা। থমথমে রাজনৈত..

পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়ায় ঘটে গেছে এক নাটকীয় ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা—যেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখের সামনে থেকেই ছাত্রদল নেতা কবির জোমাদ্দারকে ছিনিয়ে নিয়েছেন স্থানীয় শ্রমিক দলের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম। ঘটনার সময় পুলিশ ভ্যানে করে কবিরকে থানায় নেওয়া হচ্ছিল। শুক্রবার, ২৩ মে দুপুরে উপজেলার ভিটাবাড়ীয়া ইউনিয়নের মঞ্জু মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের কাজে বাধা ও হামলার ঘটনায় ইতিমধ্যে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।

ঘটনার সূত্রপাত হয় জমি দখল সংক্রান্ত এক বিবাদের মাধ্যমে। স্থানীয় মোর্শেদা বেগম ৯৯৯-এ ফোন করে জানান, তার জমিতে একদল লোক অবৈধভাবে গাছ কাটছে। এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভান্ডারিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মানিক লাল হাওলাদার। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ গাছ কাটায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে একজন ব্যক্তি, যিনি নাছির নামে পরিচিত, গাছ কাটতে থাকেন। পুলিশ তাকে আটক করতে গেলে ছাত্রদল নেতা কবির জোমাদ্দার তার পক্ষে দাঁড়ান এবং পালাতে সহায়তা করেন।

এর পরপরই পুলিশ কবিরকে আটক করে থানায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু নাটকীয়তা তখনই শুরু হয়, যখন পুলিশের গাড়িটি মঞ্জু মার্কেট এলাকায় পৌঁছায়। সেখানেই নাছির, তার ছোট ভাই নজরুল ইসলাম—যিনি ভান্ডারিয়া উপজেলা শ্রমিক দলের সহ-সভাপতি—ও আরও কয়েকজন পুলিশের গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পথ রোধ করেন। মুহূর্তের মধ্যেই পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে তারা কবির জোমাদ্দারকে ছিনিয়ে নিয়ে যান।

এ হামলায় এসআই মানিক লাল হাওলাদার ও কনস্টেবল মানস কুমার দাস আহত হন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে নজরুল ইসলাম ও নাছিরকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

এ ঘটনার বিষয়ে ভান্ডারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহমেদ আনওয়ার বলেন, “পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধাদানকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। পাশাপাশি জমি দখল সংক্রান্ত আরেকটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।”

জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক তানজিদ রশিদ বাপ্পি জানান, ছিনিয়ে নেওয়া কবির জোমাদ্দার জেলা ছাত্রদলের কার্যনির্বাহী কমিটির সক্রিয় সদস্য।

ঘটনার প্রভাব ও বিশ্লেষণ:

এই ঘটনা ভান্ডারিয়াসহ পিরোজপুর জেলায় রাজনৈতিক উত্তেজনার নতুন মাত্রা যোগ করেছে। প্রকাশ্যে পুলিশ ভ্যান থামিয়ে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার মতো দুঃসাহসিক ঘটনা স্থানীয় প্রশাসনের নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রণক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

একদিকে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়নের অভিযোগ তুলছে, অন্যদিকে এই ঘটনার মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে, কীভাবে রাজনৈতিক পরিচয়কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে প্রশাসনিক কাজকর্মে বাধা দেওয়া হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর এমন সরাসরি হামলা শুধু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং এটি রাজনীতিকরণ ও প্রশাসনিক দুর্বলতার একটি স্পষ্ট প্রতিফলন।


উপসংহার:

পুলিশের গাড়ি থেকে আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনা শুধু আইনশৃঙ্খলা নয়, বরং রাজনীতি ও প্রশাসনের সম্পর্কের এক নতুন চিত্র সামনে এনেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও কঠোর বিচার দাবি করছে সাধারণ জনগণ ও নাগরিক সমাজ।
এখন দেখার বিষয়—আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কতটা দ্রুত এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রশাসন।

کوئی تبصرہ نہیں ملا