close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

পাকিস্তানজুড়ে বৃষ্টিতে ৮ জনের প্রাণহানি

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
পাকিস্তানে টানা মৌসুমি বৃষ্টিতে বন্যা ও দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে অন্তত ৮ জনের, দুইদিনে মৃত্যু ৩২। হুমকিতে গিলগিট-বালতিস্তানসহ নিচু অঞ্চল।..

পাকিস্তানে মৌসুমি বৃষ্টিপাত এবার রূপ নিয়েছে ভয়াবহ দুর্যোগে। গত রবিবার দিনভর টানা বৃষ্টির কারণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৮ জন, আহত হয়েছেন আরও ১৩ জন। শুধু দুইদিনেই বৃষ্টিজনিত দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে মোট ৩২ জনের। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও উদ্ধারকারী সংস্থাগুলোর মতে, এই দুর্যোগের ভয়াবহতা আরও বাড়তে পারে, কারণ আগামী কয়েকদিন ধরে ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকার আশঙ্কা রয়েছে।

রবিবার সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হয়। বিশেষত আজাদ কাশ্মীর, উত্তর-পূর্ব পাঞ্জাব, পোথোহার অঞ্চল, ইসলামাবাদ ও খাইবার পাখতুনখোয়ার একাধিক জেলায় দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি দেখা দেয়। পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির ন্যাশনাল এমার্জেন্সিস অপারেশন সেন্টার এক বিবৃতিতে জানায়, ৩ জুলাই পর্যন্ত টানা বৃষ্টি ও আকস্মিক পাহাড়ি ঢলের সম্ভাবনা রয়েছে। নিচু এলাকাগুলোতে আগাম সতর্কতা জারি করা হয়েছে।লাহোরে শুধুমাত্র একদিনেই প্রাণ হারিয়েছেন ২ জন, আহত হয়েছেন অন্তত ১২ জন। রেসকিউ ১১২২ জানায়, অধিকাংশ দুর্ঘটনাই ঘটেছে দেয়াল বা ছাদ ধসে। শরীফপুরায় কাঁচা ঘরের ছাদ ধসে পড়ে মারা যান আরও দুইজন। সবচেয়ে করুণ ঘটনা ঘটে গিলগিট-বালতিস্তানে — যেখানে কারগাহ নালার প্রবল স্রোতে ভেসে যান দুই কিশোরী বোন।

বৃষ্টির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বৈদ্যুতিক শক। করাচিতে বৃষ্টির সময় তিনজন মারা গেছেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে। শহরের বহু জায়গায় বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার পানিতে ডুবে যাওয়ায় ঘটছে এমন প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা।আজাদ কাশ্মীরের ঝেলাম ও পুঞ্চ উপত্যকার নিম্নাঞ্চল, মালাকান্দ ও হাজারা ডিভিশনের পাহাড়ি অঞ্চল, এবং পীর পাঞ্জাল রেঞ্জে আকস্মিক পাহাড়ি ঢল নামার আশঙ্কা রয়েছে। এতে নদী ও খাল উপচে পড়ে প্লাবিত হতে পারে বিশাল এলাকাজুড়ে কৃষি জমি ও ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল।

আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২৯ জুন থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত দক্ষিণ সিন্ধু, বিশেষ করে হায়দরাবাদ, বাদিন, ঠাট্টা এবং করাচিতে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়লে নগর বন্যা বা ‘আর্বান ফ্লাডিং’ দেখা দিতে পারে।উদ্ধারকারী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবার ও শনিবার টানা বৃষ্টির কারণে আকস্মিক বন্যা, ঘরবাড়ি ধস এবং বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩২ জনের। এ সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, কারণ এখনো অনেক এলাকা বিচ্ছিন্ন এবং বহু মানুষ পানিবন্দি।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনগণকে ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, বিশেষত যেসব এলাকায় বন্যার আশঙ্কা বেশি। জরুরি নম্বর চালু রাখা হয়েছে এবং উদ্ধার তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।

পাকিস্তানে এই মৌসুমি বর্ষা শুধু প্রাকৃতিক নিয়ম নয়, এবার তা রূপ নিচ্ছে মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞে। বিদ্যুৎ, পানি, বাসস্থান—সবই এখন ঝুঁকির মধ্যে। আগামী কয়েকদিনের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। জনজীবনে নেমে এসেছে এক অভাবনীয় দুর্যোগ।

Keine Kommentare gefunden


News Card Generator