close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা, ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শিক্ষার্থীদের..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে টানা দাবিপূর্ণ আন্দোলনের জেরে কর্তৃপক্ষ নিল চরম সিদ্ধান্ত! হঠাৎ করে বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ। কেন এই হঠাৎ পদক্ষেপ? জানুন ভিতরের পুরো ঘটনা।..

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ যেন রূপ নিয়েছে এক রুদ্ধশ্বাস নাট্য মঞ্চে। টানা দাবিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্যেই কলেজ প্রশাসন নিয়েছে একটি তাৎক্ষণিক এবং চরম সিদ্ধান্ত—অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে দেওয়া হয়েছে কঠোর নির্দেশনা: সব শিক্ষার্থীকে আগামীকাল দুপুর ১২টার মধ্যে হোস্টেল ত্যাগ করতে হবে

এই ঘোষণাটি আসে শনিবার, ২১ জুন তারিখে অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের এক জরুরি সভা থেকে। যেখানে উপস্থিত সদস্যরা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেন, কলেজটির একাডেমিক কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা হবে যতক্ষণ না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নিরাপদ ক্যাম্পাস, সুষ্ঠু আবাসন এবং স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নের দাবিতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। মোট পাঁচ দফা দাবি সামনে রেখে তারা একাধিকবার বিক্ষোভ করেছেন কলেজ চত্বরে, এমনকি প্রশাসনিক ভবনের সামনেও।

দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল:

  • কলেজ ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা

  • আবাসিক হলের অব্যবস্থাপনা দূর করা

  • চিকিৎসা শিক্ষা উপকরণের সংকট দূর করা

  • হোস্টেলের খাবারের মান উন্নয়ন

  • ছাত্রকল্যাণ কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনা

তাদের দাবি, এসব সমস্যার কারণে শিক্ষাজীবন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে এবং কর্তৃপক্ষ বহুবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ বন্ধ করে দেয়, যা প্রশাসনের উপর চাপ তৈরি করে।

শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলনের কারণে প্রশাসন যে চাপে পড়েছে, তা স্পষ্ট। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এই ধরনের কঠিন সিদ্ধান্তে অনেকেই অবাক হয়েছেন। বিশেষ করে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ অনেকের চোখে অত্যন্ত কঠোর ও একতরফা মনে হয়েছে।

ছাত্রছাত্রীরা বলছেন, এ ধরনের হঠাৎ সিদ্ধান্তে তারা চরমভাবে বিপাকে পড়েছেন। একজন শিক্ষার্থী বলেন,আমরা আন্দোলন করেছি আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো নিয়ে। এখন হঠাৎ করে এই সিদ্ধান্ত—এটা তো আমাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকে দমন করার চেষ্টা।

এই বন্ধ ঘোষণার ফলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের শত শত শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। কেউ জানেন না, কবে আবার খুলবে ক্যাম্পাস, কবে শুরু হবে ক্লাস, কবে হবে পরীক্ষা।

বিশেষ করে, যারা ফাইনাল ইয়ারে রয়েছেন, তাদের জন্য এটি এক বিশাল ধাক্কা। সময়মতো পরীক্ষা না হলে ইন্টার্নশিপ শুরু করা সম্ভব নয়, যার সরাসরি প্রভাব পড়বে ভবিষ্যৎ চিকিৎসা ক্যারিয়ারের ওপর।

ঘটনার পরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই বলছেন,আমাদের দাবি অযৌক্তিক নয়। কিন্তু প্রশাসন সংলাপের বদলে হঠাৎ করে আমাদের হল থেকে বের করে দিচ্ছে!

একাধিক ছাত্র প্রতিনিধি জানিয়েছেন, তারা দ্রুত প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান যেন পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান হয়।

নিউজটির গুরুত্ব বিবেচনায় বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রশাসনের এই পদক্ষেপ হয়তো আন্দোলন দমন করার একপ্রকার কৌশল। তবে এর ফলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

যদি শিক্ষার্থীরা এই সিদ্ধান্ত মানতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে পরিস্থিতি রূপ নিতে পারে আরও জটিল ও সহিংসতার দিকে। অনেকেই দাবি করছেন, দ্রুত উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ ও সংলাপ প্রয়োজন

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ঘটে যাওয়া এই ঘটনাটি শুধুই একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ সংকট নয়—এটি দেশের স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যবস্থার একটি বড় সংকেত। শিক্ষার্থীদের দাবি যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি প্রশাসনের সুরক্ষার চিন্তাও যৌক্তিক। তবে সংলাপ এবং সমঝোতা ছাড়া কোনো পক্ষই উপকৃত হবে না।

এখন সময়, দ্বন্দ্ব নয়—দ্রুত কার্যকর সমাধানের

لم يتم العثور على تعليقات