close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

অবশেষে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সাহসী সিদ্ধান্ত জর্ডানের

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে সাহসী অবস্থান নিল জর্ডান, যা বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে আলোড়ন তুলেছে।..

মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি যখন উত্তাল, তখন ক্রীড়াঙ্গনেও তার ঢেউ পড়তে শুরু করেছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এক নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিল জর্ডান। যুব বাস্কেটবল বিশ্বকাপে প্রতিপক্ষ হিসেবে ইসরায়েল থাকায় ম্যাচে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে জর্ডানের জাতীয় দল।

দ্য টাইমস অব ইসরায়েল-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বাস্কেটবল বিশ্বকাপে জর্ডান তাদের দল ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মাঠে নামাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে আন্তর্জাতিক বাস্কেটবল ফেডারেশন (FIBA)-কে।

এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এলো, যখন মুসলিম বিশ্বে ইসরায়েলবিরোধী আবেগ তুঙ্গে। গত কিছুদিনে ইসরায়েলের সঙ্গে জর্ডানের সম্পর্কেও উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে, ইরান ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সংঘাতে জর্ডানের ভূমিকা নিয়ে অনেক বিতর্ক সৃষ্টি হয়। অভিযোগ আছে, ইসরায়েল ইরানে হামলার সময় জর্ডানের আকাশপথ ব্যবহার করেছে। আবার, ইরানের ছোড়া ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলে পৌঁছার আগেই জর্ডান ভূপাতিত করেছে। এই ঘটনায় জর্ডান মুসলিম বিশ্বের ক্ষোভের মুখে পড়ে।

যুব বাস্কেটবল বিশ্বকাপে প্রতিপক্ষ থাকলেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে না খেলাকে শুধু একটি ক্রীড়া সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছে না কেউই। বরং এটিকে মুসলিম বিশ্বের প্রতি সংহতি ও রাজনৈতিক অবস্থান বলেই দেখছে বিশ্লেষকরা।

এদিকে, ইসরায়েলি বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আমোস ফ্রিশম্যান এ ঘটনায় প্রকাশ্যে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন,জর্ডানিয়ানদের কাছ থেকে খেলায় অংশগ্রহণের আশা ছিল। আমি বিশ্বাস করি, খেলাধুলা রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম নয়, বরং একটি সাংস্কৃতিক সেতু।

কিন্তু জর্ডানের অবস্থান স্পষ্ট — ক্রীড়াঙ্গনেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হবে।

জর্ডানের এই সিদ্ধান্তের ফলে নিয়ম অনুযায়ী ইসরায়েল পাবে ২০-০ টেকনিক্যাল জয়। অর্থাৎ, কোনো বল গড়ানোর আগেই তারা এক ম্যাচ জিতে যাবে। কিন্তু তবুও আদর্শের কাছে পরাজয় মেনে নিতেই প্রস্তুত জর্ডান।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জর্ডানের এই পদক্ষেপ অন্যান্য মুসলিম দেশের জন্য এক অনুপ্রেরণা হতে পারে। বহু মুসলিম দেশ যেখানে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখছে বা খেলাধুলায় অংশ নিচ্ছে, সেখানে জর্ডান ব্যতিক্রমী এক সাহস দেখাল।

বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষ জর্ডানের এই সিদ্ধান্তকে সাহসী ও মর্যাদাপূর্ণ বলেই আখ্যা দিচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এই খবর, যেখানে ‘#StandWithJordan’ ও ‘#BoycottIsrael’ হ্যাশট্যাগে লক্ষাধিক পোস্ট দেখা যাচ্ছে।

জর্ডানের এই সিদ্ধান্ত শুধু একটি খেলাকে কেন্দ্র করে নয় — এটি একটি বার্তা, একটি প্রতিবাদ, একটি অবস্থান। যখন বিশ্বমঞ্চে শক্তিধর দেশগুলোর ছায়ায় ছোট দেশগুলো অনেক সময় চুপ থাকতেই বাধ্য হয়, তখন জর্ডান দেখিয়ে দিল কিভাবে ক্রীড়াঙ্গনেও প্রতিবাদ হতে পারে শক্তিশালী এবং নীতিনিষ্ঠ।

Ingen kommentarer fundet