close
লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় এক অভূতপূর্ব মোড় নেয় বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন, যেখানে শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে আন্দোলনের মাত্রা ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভুইয়া। আওয়ামী লীগের শাসনামলে ২০১২ সালে সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত এই জেনারেল সম্প্রতি নিজের ফেসবুক পোস্টে ২০২৪ সালের বিপ্লবের নানা দিক তুলে ধরেছেন।
জেনারেল ইকবাল করিম ভুইয়া উল্লেখ করেছেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ তিনটি বড় গণঅভ্যুত্থানের মুখোমুখি হয়েছে—১৯৭১, ১৯৯০ এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে। তবে ২০২৪ সালের ঘটনাকে তিনি ‘আধা বিপ্লব’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “বিপ্লব পুরোপুরি বিকশিত হবার আগেই ফ্যাসিবাদী সরকার, সংবিধান, রাষ্ট্রপতি এবং সামরিক বাহিনীর একাংশ মিলে এটি দমন করে।”
জেনারেল ইকবাল জানান, ২০২৪ সালের আন্দোলনের সময় সেনাবাহিনীর ভূমিকা স্পষ্ট নয়। তার মতে, “সেনাবাহিনীর অবস্থান দ্বিধাগ্রস্ত হলেও গুরুত্বপূর্ণ ছিল।” বিশেষ করে অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তাদের প্রভাবকে তিনি আলাদাভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “শেখ হাসিনা কীভাবে পালিয়ে গেলেন এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশ ক্যান্টনমেন্টে কীভাবে আশ্রয় নিল?”
সাবেক সেনাপ্রধান দাবি করেছেন, আন্দোলনের সময় সেনাবাহিনীর আচরণ নিয়ে কোনো সরকারি তদন্ত বা সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে কোনো আনুষ্ঠানিক তদন্ত হয়নি। ফাঁস হওয়া গোয়েন্দা তথ্যগুলো দিয়ে সেনাবাহিনীর প্রকৃত অবস্থান নির্ণয় করা কঠিন।
আন্দোলনের সময় জেনারেল ইকবাল করিম ভুইয়া নিজের ফেসবুক কভার ও প্রোফাইল ছবি লাল করে দেন, যা সেনাবাহিনীর মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তিনি লিখেছেন, “শেখ হাসিনার সামরিক সচিব আমাকে ফোন করে আগের প্রোফাইল ছবিতে ফেরার অনুরোধ করেছিলেন। আমি রাজি হইনি। এরপর থেকেই আমার আত্মীয়-স্বজনদের নানা ধরনের হুমকির মুখোমুখি হতে হয়।”
জেনারেল ভুইয়া বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকারুজ্জামানের বিচক্ষণতার প্রশংসা করে বলেন, “আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে যখন জুনিয়র অফিসারদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ বাড়ছিল, জেনারেল ওয়াকার তাদের পাশে দাঁড়ান।” এর ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে গুলির মাত্রা কমে আসে।
জেনারেল ইকবাল দাবি করেছেন, ৪ আগস্ট রাতে শেখ হাসিনা গণভবনে সব নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানদের ডেকে আন্দোলন দমনের নির্দেশ দেন। কিন্তু সেনাবাহিনীর বেশিরভাগ সদস্য নিরস্ত্র জনতার উপর গুলি চালাতে অস্বীকৃতি জানায়। ৫ আগস্ট রাস্তায় অসংখ্য মানুষ নামলে বিজিবি, র্যাব এবং পুলিশ কোনো বাধা দেয়নি। সেনা ইউনিটগুলো জনতার সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশ করে, ফলে গণভবন দখল হয় এবং শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
জেনারেল ইকবাল করিম ভুইয়া তার পোস্টে হতাশা প্রকাশ করে লিখেছেন, “সেনাবাহিনীর সঠিক ভূমিকা নিয়ে তথ্যের অভাবের কারণে ২০২৪ সালের আন্দোলনকে ফরাসি বা রুশ বিপ্লবের সাথে তুলনা করা কঠিন।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে আরও তথ্য উন্মোচিত হলে এই আন্দোলনের প্রকৃত চিত্র স্পষ্ট হবে।
कोई टिप्पणी नहीं मिली



















