close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

নারী ফুটবলে ইতিহাস, প্রথমবার এশিয়ান কাপে বাংলাদেশ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
মিয়ানমারকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। এএফসি নারী এশিয়ান কাপে প্রথমবারের মতো চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিল লাল-সবুজের মেয়েরা।..

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে এক গৌরবময় দিন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর নারী ফুটবল দল লিখে ফেলেছে এক অবিস্মরণীয় ইতিহাস। শক্তিশালী প্রতিপক্ষ মিয়ানমারকে তাদের ঘরের মাঠে হারিয়ে ২০২৬ এএফসি নারী এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিয়েছে লাল-সবুজের মেয়েরা। এটাই প্রথমবার, কোনো বাংলাদেশি নারী জাতীয় ফুটবল দল এই মর্যাদাপূর্ণ প্রতিযোগিতার মূলপর্বে উঠল।

আজ (বুধবার) বিকেলে ইয়াঙ্গুনে অনুষ্ঠিত ম্যাচে মিয়ানমারকে ২-১ গোলে হারায় বাংলাদেশ। এই ম্যাচটি ছিল ‘সি’ গ্রুপের দ্বিতীয় খেলা। প্রথম খেলায় বাহরাইনকে হারিয়ে ৩ পয়েন্ট পাওয়া বাংলাদেশ আজকের জয়েই ছয় পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে শীর্ষে উঠে আসে। যদিও ৫ জুলাই রয়েছে গ্রুপের শেষ ম্যাচ, তার আগেই নিশ্চিত হয়েছে চূড়ান্ত পর্বে বাংলাদেশের জায়গা।

আজ সন্ধ্যায় একই গ্রুপের অপর দুই দল বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তান ২-২ গোলে ড্র করে। ফলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই গ্রুপ–সেরা হয়ে যায় বাংলাদেশ। নিয়ম অনুযায়ী, সমান পয়েন্ট হলেও মুখোমুখি লড়াইয়ের ভিত্তিতে এগিয়ে থাকা দলই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়। মিয়ানমার ও বাহরাইন যদি শেষ ম্যাচে জিতেও ছয় পয়েন্ট পায়, বাংলাদেশই গ্রুপ–শীর্ষে থাকবে।

চূড়ান্ত পর্বের আয়োজক অস্ট্রেলিয়া ইতিমধ্যেই মূলপর্বে জায়গা করে নিয়েছে স্বাগতিক হিসেবে। তাদের সঙ্গে আগে থেকেই ছিল গত আসরের সেরা তিন দল—জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং চীন। বাকি আটটি স্থান নির্ধারিত হবে বাছাইপর্বে আট গ্রুপের চ্যাম্পিয়নদের মাধ্যমে।

এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ দুই ম্যাচে পূর্ণ ৬ পয়েন্ট। মিয়ানমারের রয়েছে ৩ পয়েন্ট, আর বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তানের রয়েছে ১ পয়েন্ট করে। ফলে গ্রুপ ‘সি’ থেকে প্রথম দল হিসেবে মূলপর্ব নিশ্চিত করল বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে আগে কখনো কোনো নারী দল এশিয়ান কাপে জায়গা করতে পারেনি। এমনকি পুরুষদের জাতীয় দলেরও মূলপর্বে খেলার সুযোগ হয়েছিল মাত্র একবার—১৯৮০ সালে কুয়েতের আসরে। এরপর থেকে দীর্ঘ ৪৪ বছর পেরিয়ে গেছে, বাংলাদেশ আর কখনো এশিয়ান কাপে জায়গা করে নিতে পারেনি।

বর্তমানে বাংলাদেশের পুরুষ দল ২০২৭ সালের এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে অংশ নিচ্ছে। তবে প্রথম দুই ম্যাচে মাত্র ১ পয়েন্ট পাওয়ায় তাদের মূলপর্বে ওঠা কঠিন হয়ে গেছে। এ অবস্থায় নারী দলের এমন ঐতিহাসিক অর্জন পুরো দেশের ক্রীড়ামোদী মানুষকে গর্বিত করেছে।

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের এই সাফল্য নিঃসন্দেহে দেশের ক্রীড়া জগতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এ জয় শুধু একটি ম্যাচ জেতা নয়—এ এক লড়াই, স্বপ্ন আর সম্মান অর্জনের গল্প। নারী ফুটবলাররা আবারও প্রমাণ করেছে, সুযোগ পেলে তারাও পারে দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে।

এখন অপেক্ষা, ২০২৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় বসতে যাওয়া এএফসি নারী এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে মাঠ কাঁপানো পারফরম্যান্সের। কোটি কোটি বাংলাদেশির চোখ এখন সেদিকেই।

Ingen kommentarer fundet