‘মুজিবীয় শুভেচ্ছা’ জানানোয় ছাত্রদল নেতাকে শোকজ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
মাত্র ৭ সেকেন্ডের একটি পুরোনো ভিডিওতে ‘মুজিবীয় শুভেচ্ছা’ জানানোয় শ্রীপুর ছাত্রদল সভাপতির বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে তীব্র সাংগঠনিক পদক্ষেপ। গাজীপুর জেলা ছাত্রদলে তোলপাড়—কারণ দর্শানোর নোটিশ, বিতর্কিত বক্তব্য,..

মাত্র ৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও। তাতেই তোলপাড় গাজীপুর ছাত্রদল।
বিতর্কিত সেই ভিডিওতে শ্রীপুর উপজেলার প্রহলাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ হাসানকে বলতে শোনা যায়, “আমি প্রহলাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে মুজিবীয় শুভেচ্ছা জানাই।”
এই এক বাক্যেই যেন শৃঙ্খলাভঙ্গের ঝড় ওঠে পুরো ছাত্রদল সংগঠনে।

ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরপরই গাজীপুর জেলা ছাত্রদল সরব হয়। সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে নাহিদ হাসানকে শোকজ করা হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যাখ্যা চেয়ে পাঠানো হয়েছে কারণ দর্শানোর নোটিশ।

গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক সরকার মো. রাকিব হোসেন স্বাক্ষরিত ওই শোকজ নোটিশে স্পষ্ট ভাষায় জানানো হয়,শ্রীপুর উপজেলার প্রহলাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের দায়িত্বশীল পদে থেকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা ব্যাখ্যা দিতে বলা হলো।

তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. সোহাগ হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক জাফর ইকবাল জনির উপস্থিতিতে জেলা কার্যালয়ে এসে বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে হবে।

স্থানীয় নেতাকর্মীদের দাবি, এটি নতুন কোনো বক্তব্য নয়। বরং, এটি প্রায় ৪-৫ মাস আগের এক পথসভা থেকে নেওয়া।
জানা গেছে, ছাত্রদলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহস্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. এসএম রফিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত একটি পথসভায় বক্তব্য দিচ্ছিলেন নাহিদ হাসান।
ভিডিওর শেষ দিকে দেখা যায়, নাহিদ ওই বিতর্কিত কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই ডা. রফিকুল ইসলাম তার কাছ থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেন।

২০২৩ সালের ২৭ মার্চ গঠিত শ্রীপুর উপজেলার প্রহলাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের কমিটিতে নাহিদ হাসান সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান।
স্থানীয়দের মতে, তিনি বেশ সক্রিয় রাজনীতিক হলেও এই বক্তব্য তাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে।
গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জাফর ইকবাল জনি বলেন,এক সময় যখন ছাত্রদলের কোনো নেতাকর্মী মাঠে আসত না, তখন নাহিদ হাসান রাজনীতির ময়দানে আমাদের সঙ্গে ছিলেন। আমরা তার কৃতজ্ঞ। তবে সংগঠনের আদর্শ ও শৃঙ্খলা আগে।

নাহিদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
তার পক্ষ থেকে কোনো লিখিত বা ভিডিও বার্তাও পাওয়া যায়নি।
এতে করে দলের ভেতরে ও বাইরে নানান জল্পনা তৈরি হয়েছে—তিনি কী সত্যিই ভুল করে বলেছেন? নাকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কিছু?

পুরো ঘটনায় ছাত্রদলের বিভিন্ন স্তরে তৈরি হয়েছে মতভেদ। কেউ কেউ বলছেন, এটি ‘শব্দচয়নের ভুল’ মাত্র, কেউ আবার একে ‘সাজানো ফাঁদ’ বলেও আখ্যা দিচ্ছেন।
একাংশের মতে, শোকজ নোটিশ দ্রুত প্রত্যাহার না করা হলে স্থানীয়ভাবে বিভাজন বাড়তে পারে। অন্যদিকে নেতৃত্ব ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলও বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখছে।

মাত্র ৭ সেকেন্ডের ভিডিও আর একটি বাক্য—"মুজিবীয় শুভেচ্ছা"।
এতেই নাহিদের ছাত্রদল জীবন এখন ঝুঁকিতে।
এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল, রাজনীতির মঞ্চে শব্দ যেমন শক্তি, তেমনি বিপদের নামও।
নাহিদ হাসানের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তার ব্যাখ্যার ওপর—আর ছাত্রদলের অবস্থান নির্ধারণ করবে সেই ব্যাখ্যার গ্রহণযোগ্যতা।

Không có bình luận nào được tìm thấy