মেট্রো স্টেশনে আগুন নয়, মহড়া চালিয়েছে ফায়ার সার্ভিস

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রাজধানীর উত্তরা ও বিজয় সরণি মেট্রো স্টেশনে কোনো আগুন লাগেনি, বরং ছিল ফায়ার সার্ভিসের পরিকল্পিত মহড়া। তবে ফেসবুকে ভুল তথ্য ছড়িয়ে আতঙ্ক তৈরি করেছে কিছু ব্যবহারকারী। বিস্তারিত পড়ুন এই প্রতিবেদনে—যেখানে জ..

রাজধানীর উত্তরা সেন্টার ও বিজয় সরণি মেট্রোরেল স্টেশনজুড়ে হঠাৎ করেই ছড়িয়ে পড়ে "আগুন লেগেছে" — এমন গুজব। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভে এসে জানান দিতে থাকেন, “মেট্রো স্টেশনে আগুন!” মুহূর্তেই খবর ভাইরাল হয়ে যায়। আতঙ্ক ছড়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে। কিন্তু বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন—ঘটনাটি ছিল আগেই পরিকল্পিত, পূর্ব-নির্ধারিত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একটি অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার মহড়া।

২৫ জুন বুধবার, সকাল ১১টায় উত্তরা সেন্টার এবং বিকেল ৩টায় বিজয় সরণি স্টেশনে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, মেট্রোরেলের নিরাপত্তাকর্মী, স্থানীয় ভলান্টিয়ার এবং ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা।

মহড়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল,

  • মেট্রো স্টেশনে আগুন লাগলে তা কীভাবে দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা যায়

  • যাত্রীদের নিরাপদে কীভাবে বের করে আনা হয় (ইভাকুয়েশন)

  • আহতদের কীভাবে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে পাঠানো হয়

এই মহড়ায় ব্যবহার করা হয় ওয়াটার টেন্ডার, পাম্প ক্যারিং টেন্ডার, স্নোরকেল, সিজার লিফট, অ্যাম্বুলেন্সসহ আধুনিক সব উদ্ধার ও অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম। বাস্তব দৃশ্যের মতো করে মেট্রোর ভেতরে 'আগুন লাগার' দৃশ্য তৈরি করে যাত্রীদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া ও আহতদের প্রাথমিক সেবা দিয়ে দ্রুত হাসপাতাল পাঠানোর অনুশীলন দেখানো হয়।

সিনিয়র স্টাফ অফিসার শাহজাহান শিকদার বলেন, “মেট্রোরেলের মতো জায়গায় যেকোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমাদের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এই মহড়া করা হয়েছে। এতে মেট্রো কর্তৃপক্ষ এবং যাত্রীদের ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত, সেটি শেখানো হয়েছে।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম খায়রুল আলম ও ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, “এই মহড়ার উদ্দেশ্য শুধু কর্মীদের প্রশিক্ষণ নয়, জনগণকেও সচেতন করা। যাতে দুর্ঘটনার সময় সবাই আতঙ্কিত না হয়ে, কীভাবে শান্ত থেকে কাজ করতে হয় তা বুঝতে পারেন।

মহড়া পরিচালনা করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ঢাকার সহকারী পরিচালক কাজী নজমুজ্জামান। উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, জোন প্রধান এবং ট্রাফিক পুলিশ।

সবশেষে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো—সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেকোনো ঘটনার ‘অংশবিশেষ’ দেখে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। কারণ এই মহড়াকেই অনেকেই 'আসল আগুন' মনে করে তথ্য না জেনে পোস্ট দিয়ে ফেলেন, যা তৈরি করে অযথা আতঙ্ক।

এই মহড়া আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, মেট্রোর মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা কতোটা গুরুত্বপূর্ণ। একইসঙ্গে, আমাদের দায়িত্বশীল আচরণ কতোটা প্রয়োজন—বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার আগে সত্য যাচাই করাটা।

এমন মহড়ার ধারাবাহিকতা ভবিষ্যতেও থাকবে—এমনটাই জানায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

No comments found