close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

লিবিয়ায় দালাল চক্রের ফাঁদে মঠবাড়িয়ার তিন যুবক, মুক্তিপণ দাবি ১২ লাখ টাকা!

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
নিজস্ব প্রতিবেদক: ভাগ্য বদলের আশায় বিদেশ পাড়ি জমিয়ে ভয়ংকর দালাল চক্রের হাতে বন্দি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার তিন যুবক। তাঁদের ওপর চলছে অমানবিক নির্যাতন। চক্রটি প্রতিজ
নিজস্ব প্রতিবেদক: ভাগ্য বদলের আশায় বিদেশ পাড়ি জমিয়ে ভয়ংকর দালাল চক্রের হাতে বন্দি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার তিন যুবক। তাঁদের ওপর চলছে অমানবিক নির্যাতন। চক্রটি প্রতিজনের মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করেছে ১২ লাখ টাকা। টাকা না দিলে হত্যার হুমকি দিচ্ছে তারা। অসহায় পরিবারগুলো এখন দিশাহারা। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে মঠবাড়িয়ার সাপলেজা ইউনিয়নের নলী জয়নগর গ্রামের লোকমান হোসেন (৩৫), মো. ইউনুস (৩৪), এবং জসিম (৩৪) স্থানীয় দালালের মাধ্যমে লিবিয়ায় যান। প্রাথমিক চুক্তি ছিল তিন লাখ টাকার বিনিময়ে চাকরির সুব্যবস্থা। প্রথমে দুবাই হয়ে তাঁরা লিবিয়ায় পৌঁছান। এর পরপরই পরিবারের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কিছুদিন পর ইমোর মাধ্যমে তাঁদের নির্যাতনের খবর জানান তাঁরা। পরিবারের অসহায় আর্তনাদ লোকমানের স্ত্রী রিমা আক্তার জানালেন, ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে চক্রটি। ইতোমধ্যে ১৫ কাঠা জমি বিক্রি করে কিছু টাকা দিয়েছেন। রিমার ভাষায়, “আমার স্বামী ইমোতে যখন কল দেয়, তার চেহারা আর চিনতে পারি না। তাকে ২৪ ঘণ্টায় এক টুকরো রুটি আর এক কাপ পানি খেতে দেওয়া হয়।” ইউনুসের বাবা কুদ্দুস গোলদার বলেন, “ছেলে গাড়ি চালাত। ভালোই চলত সংসার। কিন্তু বিদেশ যাওয়ার পর থেকে ১৫ লাখ টাকা দিয়েছি। আর কত দিতে হবে, জানি না। ছেলের চেহারা কঙ্কালের মতো হয়ে গেছে। আল্লাহ জানে, তাকে আদৌ দেখতে পাব কি না।” মামলা ও প্রশাসনিক উদ্যোগের অভাব ২০২৪ সালে লোকমানের স্ত্রী রিমা মঠবাড়িয়া থানায় মানব পাচার আইনে মামলা করেন। মঠবাড়িয়া থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “মামলাটি তদন্ত করছে জেলা গোয়েন্দা শাখা। তবে এ ধরনের বিষয়গুলো জটিল, কারণ লিবিয়ার মতো দেশে আমাদের নিয়ন্ত্রণ সীমিত।” পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান বলেন, “এ ধরনের ঘটনায় প্রশাসনের সরাসরি ভূমিকা সীমিত। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।” স্বপ্নভঙ্গ আর জীবনের অনিশ্চয়তা এদিকে জসিমের পরিবারের কেউ কথা বলতে রাজি হয়নি। তাঁদের ধারণা, দালাল চক্রের স্থানীয় কোনো সংযোগ জানাজানি হলে জসিমের ওপর নির্যাতন আরও বেড়ে যাবে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, কীভাবে দালাল চক্র এভাবে মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে? প্রশাসনের কাছে দাবি, দ্রুত এই যুবকদের দেশে ফিরিয়ে আনা এবং দালাল চক্রের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। শেষ কথা ভাগ্য বদলের আশায় দেশ ছেড়ে নির্যাতনের শিকার হওয়া এই যুবকদের কাহিনি কেবল হৃদয়বিদারকই নয়, বরং মানব পাচারের ভয়াবহতাকে সামনে নিয়ে আসে। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজন কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা।
Không có bình luận nào được tìm thấy