close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

লামায় মাটির নিচে মিলল লুটের ২১ লাখ টাকা

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বান্দরবানের লামায় আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানির অফিসে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর ডাকাতির ঘটনায় মাটি খুঁড়ে উদ্ধার হলো লুটের ২১ লাখ টাকা। অস্ত্রধারী ২০ সদস্যের ডাকাতদলের নেতৃত্বে ছিল আন্তঃজেলা চক্রের করিম ও আরিফ..

লামায় মাটি খুঁড়ে বেরিয়ে এলো লুটের ২১ লাখ টাকা, ভয়াবহ ডাকাতির নাটকীয় পরিণতি

বান্দরবানের লামায় ঘটে যাওয়া এক ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনার নাটকীয় মোড় নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পুরো এলাকায়। আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানির তামাক ক্রয় অফিস থেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে লুট করা ১ কোটি ৭২ লাখ টাকার মধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে ২১ লাখ ১৭ হাজার ২০০ টাকা। যা পাওয়া গেছে পৌরসভা এলাকার দুটি স্থানে মাটি খুঁড়ে। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে ভয়াবহ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৮ জন, যার মধ্যে রয়েছেন তিনজন নারী।

লুটের শুরু: ভোররাতে হামলা

৯ মে, ভোররাতে বান্দরবানের লামা উপজেলার লাইনঝিরি এলাকায় অবস্থিত আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানির তামাক ক্রয় অফিসে হানা দেয় ১৫ থেকে ২০ জনের অস্ত্রধারী ডাকাতদল। ডাকাতরা কোম্পানির অফিসে ঢুকে প্রথমে নিরাপত্তা কর্মী ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে। এরপর অফিসে থাকা নগদ ১ কোটি ৭২ লাখ ৭৫ হাজার ৬৩৮ টাকা লুট করে নেয় তারা। ঘটনার সময় স্থানীয় কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই ডাকাতরা পালিয়ে যায়।

তদন্তে নেমে একের পর এক ধরা পড়ে মূল হোতারা

এই চাঞ্চল্যকর ঘটনার পর ১০ মে লামা থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। মামলার তদন্তে নামার পর পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে অভিযান শুরু করে। একপর্যায়ে বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় মোট ৮ জনকে। তাদের মধ্যে চকরিয়া উপজেলার পূর্ব ভেউলা এলাকার মারুফুল ওরফে আরিফ, লক্ষ্যাচর এলাকার নাঈমুল ইসলাম ওরফে সাগর, লামা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুর রহিম, সুজন, সাবেক বিলছড়ি এলাকার আনোয়ারা বেগম, করিমের স্ত্রী ও বোন এবং আরও একজন পুরুষ রয়েছেন।

মাটি খুঁড়ে উদ্ধার: রহস্যের জট খুলছে

গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে চমকপ্রদ তথ্য। তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে লামা পৌরসভা এলাকার দুটি স্থান থেকে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করে প্রায় ১৮ লাখ টাকা। এর আগে আব্দুর রহিমের কাছ থেকে নগদ ৫০ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ওয়াসের আলীর পাহাড়ি জমিতে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় আরও ২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা।

লামা থানার অফিসার ইনচার্জ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, “আমরা করিমের স্ত্রীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়। পরে তার দেখানো জায়গায় দুটি স্থানে মাটি খুঁড়ে টাকা উদ্ধার করা হয়। তদন্তে আরও অনেক তথ্য বেরিয়ে আসছে।”

করিম-আরিফের নেতৃত্বেই ভয়াবহ ডাকাতি

তদন্তকারী কর্মকর্তা এনামুল হক জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃত করিম হচ্ছেন দক্ষিণ চট্টগ্রামের আন্তঃজেলা ডাকাত দলের একজন সক্রিয় সদস্য। এই ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবেই তাকেই সন্দেহ করা হচ্ছে। এছাড়া করিম ও তার সহযোগী আরিফ এই পুরো পরিকল্পনার নেতৃত্বে ছিলেন বলে পুলিশের ধারণা। তারা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ডাকাতির পরিকল্পনা করছিল এবং স্থানীয় কয়েকজনকে ব্যবহার করে এই বিশাল লুটের ঘটনা ঘটায়।

অভিযান চলছে: পুরো অর্থ উদ্ধারে তৎপর পুলিশ

পুলিশ জানিয়েছে, এই মামলার তদন্ত এখনো চলমান। গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বাকি লুটের টাকাগুলো উদ্ধারে অভিযান চালানো হচ্ছে। একই সঙ্গে যারা এখনও পলাতক রয়েছে, তাদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

জনমনে আতঙ্ক ও বিস্ময়

এই ঘটনায় পুরো লামা এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে আতঙ্ক ও চাঞ্চল্য। কিভাবে একটি বৃহৎ কোম্পানির নিরাপত্তা ভেদ করে এত বড় অঙ্কের অর্থ ডাকাতি হলো, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। আবার, পুলিশ যেভাবে মাটি খুঁড়ে লুটের টাকা উদ্ধার করছে, তাতেও বিস্মিত স্থানীয়রা।

এখন গোটা এলাকার নজর লামা থানার তদন্তে। সকলেই জানতে চাইছে—এখনও যেসব অর্থ ফেরত আসেনি, সেগুলো কোথায়? আর এর সঙ্গে আর কারা জড়িত?

कोई टिप्पणी नहीं मिली


News Card Generator