close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

কর্ণফুলীর পশুর হাটের মরুর উট ফিরে গেল গাবতলীতে

Imran Hossain avatar   
Imran Hossain
****

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জারটেক কোরবানির পশুর হাটে এবার দেখা মিলেছিল তিনটি মরুর উটের। এরআগে ২০২২ সালে এ হাটে  গোলাপি মহিষ তুলে বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন এক খামারি। এবার সেই চমককে ছাপিয়ে গেছে উটের উপস্থিতি। যশোরের বেনাপোলের ফিরোজ-মামুন ডেইরি ফার্ম থেকে আনা হয়েছে তিনটি উট। হাটে তোলার পরপরই উট দেখতে ভিড় জমিয়ে ছিলেন দর্শনার্থী ও ইউটিউবাররা। প্রায় এক সপ্তাহ হাটে রেখেও বিক্রি করতে না পেরে বেপারি ফিরে নিয়ে গেলেন উট গুলো।

গত বুধবার রাতে ঢাকার গাবতলী হাটে বিক্রির উদ্দ্যেশে ফিরোজ-মামুন ডেইরি ফার্মের প্রতিনিধি গাজী সিরাজুল ইসলাম নিয়ে গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বাজারের ইজারাদার জসিম উদ্দিন জুয়েল।

তিনি বলেন, ‘বাজারের শুরুতে যশোরের বেনাপোল থেকে তিনটি উট এনেছিলেন এক বেপারি। সপ্তাহখানেক রেখে তিনটির মধ্যে একটি উট চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এম. মনজুর আলম চৌধুরী পরিবার ২৫ লাখ টাকায় কিনেছেন। আর দুটি উট ক্রেতা না পাওয়ায় ঢাকা রাজধানীর গাবতলী পশুর হাটে নিয়ে গেছেন।’

এরআগে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে নতুন কিছু উপস্থাপনের চিন্তা থেকেই তিনটি উট হাটে এনেছি বাজার পরিচালনা কমিটি। একেকটি ১২ থেকে ১৫ মণ। কোরবানিতে শৌখিন ক্রেতাদের জন্য এসব উট আনা হয়েছিল। পাশাপাশি বড় আকৃতির প্রায় ৫০টি গরুও এনেছিল।

হাট সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার সকালে যশোরের বেনাপোল থেকে ট্রাকে করে তিনটি উট আনা হয় মইজ্জারটেক পশুর হাটে। প্রতিটি উটের দাম হাঁকানো হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা। এরমধ্যে একটি উট ২৫ লাখ টাকায় চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মনজুর আলম পরিবার কিনেছে। বাকি দুটি উট বিক্রির জন্য ঢাকার গাবতলী হাটে নিয়ে যান উটের মালিক।

ব্যাপারীরা জানান, সাধারণত ঈদ উপলক্ষে ভারতের রাজস্থান, গুজরাটের মরুভূমি এলাকা এবং হরিয়ানা  থেকে উট ও দুম্বা আমদানি করা হয়। কখনো কখনো পাকিস্তান থেকে উট আনা হয়। সীমান্তবর্তী জেলা যশোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের স্থলবন্দর হয়ে উটগুলো বাংলাদেশে আসে। প্রতিবছর হাটে গরু, খাসি, মহিষের পাশাপাশি উট ও দুম্বারও ক্রেতা থাকে। রাজধানী ঢাকার বাজারে উটের দেখা বেশি মেলে, চট্টগ্রামে তুলনামূলক কম দেখা যায় উট।

এদিকে কোরবানের দুইদিনে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও কর্ণফুলীর পশুর হাট জমে উঠতে শুরু করেছে। এসব হাটে এখন প্রাধান্য পাচ্ছে দেশীয় খামার ও গৃহস্থবাড়িতে পালিত গরু। এ বছর ভারতীয় গরুর আমদানি তুলনামূলক অনেকটায় কম বলে দাবী করছেন বেপারিরা। তবে গরু-ছাগলের সরবরাহ বাড়লেও ক্রেতার উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম থাকায় ন্যায্য দাম না পাওয়ার অভিযোগ করছেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কর্ণফুলীর ঐতিহ্যবাহী মইজ্জ্যেরটেক, ফাজিলখার হাট, আনোয়ারার ঐতিহ্যবাহী এশার্দ আলী সরকার হাট ও হাইলধর মালঘর বাজার হাটে কোরবানির পশু বিক্রি জমজমাট হয়ে উঠেছে।

হাট সংশ্লিষ্টরা জানান, এ বছর কোরবানির বাজারে দেশীয় গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরুর আমদানি একেবারেই নেই বললেই চলে। পাশাপাশি, বিগত কয়েক বছরে ক্ষতির মুখে পড়া অনেক খামারি এবার বড় পরিসরে পশু প্রস্তুত করেননি। ফলে স্থানীয় গৃহস্থদের পালিত পশুই এবার হাটে বড় অংশ দখল করেছে।

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী এশার্দ আলী সরকার হাটের ইজারাদার ক্যাপ্টেন নূর মোহাম্মদ জানায়, ‘বৃহস্পতিবার শেষ মুহুর্তে এসে হাটে পশু বেচাকেনা জমে উঠেছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে পছন্দের পশু কিনতে আসছেন এ হাটে। শুক্রবার শেষ বাজার আরও জমবে বলে আশা করছি আমরা। এই হাটের ঐতিহ্য ধরে রাখতে নানান পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। বিশেষ করে ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য রয়েছে ব্যাংকি সুবিধা। কেউ যেন প্রতারিত না হয়, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এছাড়াও তুলনামূলক কম হাসিলে পশু বেচাকেনা হচ্ছে।’

হাটের আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে জানতে আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন ও কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শরীফ জানান, হাটে যাতে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য পুলিশের একটি টিম সার্বক্ষণিক টহলে রয়েছে। এখনও পর্যন্ত হাটে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলেও জানান তারা।

Không có bình luận nào được tìm thấy