close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

কৃষকের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতে ‘কৃষিপণ্য মূল্য কমিশন’ গঠনের দাবিতে সরব কৃষক-মজুর সংহতি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশ কৃষক-মজুর সংহতি দাবি জানিয়েছে অবিলম্বে ‘কৃষিপণ্য মূল্য কমিশন’ গঠনের। সরকারের বাজেট ঘোষণার আগেই এক প্রাক-বাজেট সেমিনারে তারা বলেন, কৃষিতে বিনিয়োগ বাড়ানো ও কৃষকের ফসলের লাভজনক মূল্য নিশ্চিত করা..

বাংলাদেশ কৃষক-মজুর সংহতি এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দাবি জানিয়েছে, কৃষকের উৎপাদিত ফসলের লাভজনক মূল্য নিশ্চিত করতে অবিলম্বে 'কৃষিপণ্য মূল্য কমিশন' গঠন করতে হবে। এছাড়াও তারা বলেন, দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও গ্রামীণ অর্থনীতির পুনর্জাগরণের জন্য কৃষি খাতে সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়াতে হবে।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম মিলনায়তনে শনিবার সকাল ১১টায় আয়োজিত এক প্রাক-বাজেট সেমিনারে এ দাবি জানান সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
“কৃষিখাতে বিনিয়োগে সরকারি ও বেসরকারি বরাদ্দ বৃদ্ধি” শীর্ষক সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ কৃষক-মজুর সংহতির উদ্যোগে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও প্রবীণ কৃষক নেতা দেওয়ান আব্দুর রশীদ নিলু। তিনি বলেন, “গত ৫৩ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষকের অবদান সবসময়ই মুখ্য হলেও, কৃষক-মজুরদের স্বার্থ রক্ষায় রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ পায়, তা বাস্তবায়নে কৃষিখাত সংস্কার এখন সময়ের দাবি।”

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম খান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূলে রয়েছে কৃষিখাত। গত ৫৪ বছরে কৃষিখাত প্রতিবছর গড়ে ৩% প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা বৈশ্বিক গড়ের চেয়েও বেশি।” তিনি কৃষক-মজুর সংহতির প্রস্তাবিত ধারণাপত্রে উত্থাপিত সব সুপারিশের সাথে একমত পোষণ করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুক বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই কৃষিতে কাঠামোগত সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে। তবে সরকারি ব্যবস্থার দুর্বলতা ও দুর্নীতির কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি।”
তিনি বলেন, “বর্তমানে কৃষিখাতের প্রায় ৯০ ভাগ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বেসরকারি খাতে। তাই টেকসই উন্নয়নের জন্য বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধিই হবে মূল চালিকাশক্তি।”

সেমিনারের শুরুতে শহীদ কৃষক আবু সাঈদসহ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সব শহীদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন—

  • বাচ্চু ভুঁইয়া (বাংলাদেশ বহুমুখী শ্রমজীবী সমিতির সভাপতি)

  • অ্যাড. এস এম সবুর (বাংলাদেশ কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি)

  • বজলুর রশিদ ফিরোজ (সমাজতান্ত্রিক কৃষক ও ক্ষেতমজুর ফ্রন্ট’র সভাপতি)

  • ব্যারিস্টার ওবায়দুর রহমান টিপু (জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের যুগ্ম সম্পাদক)

  • অধ্যক্ষ আশেক ই ইলাহি (জাতীয় কৃষক জোটের সাধারণ সম্পাদক)

  • ইফতেখার আলী (প্রাকৃতিক কৃষি আন্দোলনের সংগঠক)

  • শামসুল আলম (কৃষক মজুর সংহতির সাংগঠনিক সম্পাদক)

  • সৈকত আরিফ (বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক)

সেমিনারের সঞ্চালনা করেন কৃষক মজুর সংহতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলিম
প্রধান আলোচনার শুরুতে সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুর রহমান কৃষিখাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রস্তাবসহ একটি বিশ্লেষণধর্মী ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন।

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন কৃষক সংগঠন, শ্রমজীবী সংগঠন ও ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
সবার এক অভিন্ন দাবি— কৃষক যেন নিজের ফসলের ন্যায্য দাম পায় এবং সরকার যেন আর সময় নষ্ট না করে ‘কৃষিপণ্য মূল্য কমিশন’ গঠন করে এই দাবি পূরণের পথ প্রশস্ত করে।

कोई टिप्पणी नहीं मिली