বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ এক মোড় নিতে চলেছে। দীর্ঘদিনের অপেক্ষা এবং অনিশ্চয়তা শেষে বিএনপির একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল শনিবার সন্ধ্যায় যমুনায় প্রবেশ করেছে, যেখানে তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে।
বিএনপির এই চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলের স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন আরও তিনজন শীর্ষ নেতা—ড. আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং সালাহ উদ্দিন আহমদ।
বিএনপির পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরেই এই বৈঠকের সময় চাওয়া হচ্ছিল, কিন্তু তা মেলেনি। বিষয়টি নিয়ে গতকালই স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান যে, গত চার-পাঁচ দিন ধরে তারা বৈঠকের জন্য সময় চেয়ে এলেও কোনো সাড়া পাননি।
তবে হঠাৎ করেই শুক্রবার রাতে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয় এই বৈঠকে অংশ নিতে, যা রাজনৈতিক মহলে একপ্রকার চমকই বয়ে আনে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং পরবর্তী নির্বাচনের রূপরেখা নিয়ে এই বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হতে পারে। বিশেষ করে বিএনপির বিভিন্ন দাবিদাওয়া ও তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাব্য শর্তাবলি—এই আলোচনায় প্রাধান্য পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অপরদিকে, এই বৈঠক শুধু বিএনপির সঙ্গেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বৈঠক করবেন জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গেও। জানা গেছে, বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের পরপরই রাত ৮টা ৩০ মিনিটে তিনি বৈঠকে বসবেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে।
এত দ্রুত ও ঘনঘন এসব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক, বিশেষ করে এমন এক সময় যখন আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নানা প্রশ্ন ও চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে—তা থেকে বোঝা যাচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুত কোনো রাজনৈতিক সমঝোতার দিকে এগোতে চায়।
তবে ঠিক কী আলোচনা হয়েছে বা হতে যাচ্ছে—তা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। রাজনৈতিক মহলসহ সাধারণ জনগণের দৃষ্টি এখন যমুনার এই বৈঠকের দিকে। বিএনপির অবস্থান, দাবি এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাব—সবকিছুই আগামী দিনের রাজনীতিকে দারুণভাবে প্রভাবিত করতে পারে।