জুলাই শহীদের তালিকায় আরও ১০ শহীদের নাম

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নতুন ১০ শহীদকে অন্তর্ভুক্ত করে মোট শহীদ সংখ্যা ৮৪৪ এ পৌঁছেছে, যা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হয়েছে।..

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সোমবার একটি গেজেট প্রকাশ করে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ তালিকায় নতুন ১০ জন শহীদকে অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে। এই সংশোধিত গেজেট অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত এই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন মোট ৮৪৪ জন।

গেজেটটি প্রকাশিত হয়েছে “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জুলাই–যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫” এর সংশ্লিষ্ট ধারা এবং মন্ত্রণালয়ের কার্যবিধি অনুযায়ী। এটি গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের স্বীকৃতি ও তাঁদের পরিবার ও সন্তানদের কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য সরকারি স্তরে নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

নতুন শহীদদের মধ্যে রয়েছেন কুড়িগ্রামের মো. রফিকুল ইসলাম, শরীয়তপুরের নড়িয়ার বাঁধন, ঢাকার পূর্ব সেনপাড়া পর্বতা এলাকার কবির, যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালীর মো. নাসির হোসেন, দনিয়ার মো. নুর হোসেন ও উত্তর কুতুবখালীর মো. আসলাম, চট্টগ্রামের ডবলমুরিংয়ের মো. হাছান, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর ইয়াছিন, যশোর সদরের আ. আজিজ এবং বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের মো. নুরু বেপারী।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান, যা ২০২৪ সালের গরম মাসে শুরু হয়েছিল, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই গণ-অভ্যুত্থানে হাজার হাজার মানুষ প্রতিবাদে নামেন, তাদের মধ্যে অনেকেই প্রাণ হারান। শহীদদের সম্মান এবং তাদের পরিবারের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে সরকারের এই পদক্ষেপ প্রশংসিত হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে শহীদ পরিবারের সদস্যরা সরকারি সুবিধা, পুনর্বাসন এবং অন্যান্য কল্যাণমূলক সুযোগ-সুবিধা পাবে। এছাড়া, শহীদদের প্রতি সম্মান জানাতে এবং তাঁদের ত্যাগের স্বীকৃতি হিসেবে সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে।

মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, "গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের তালিকা নিয়মিত হালনাগাদ করা হচ্ছে যাতে যারা শহীদ হয়েছেন তাঁদের সঠিক স্বীকৃতি পাওয়া যায়। নতুন তালিকা প্রকাশের মাধ্যমে শহীদ পরিবার ও তাঁদের সন্তানরা সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা পাবে।"

বর্তমানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শহীদ স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন, সভা-সমাবেশ ও অন্যান্য কর্মসূচি চলছে। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনও শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই শহীদদের তালিকা প্রকাশের মাধ্যমে শুধু তাঁদের সম্মান বৃদ্ধি পায় না, বরং এটি দেশের ইতিহাসে একটি স্পষ্টবার্তা দেয় যে, যারা জাতির জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাদের অবদান কখনো ভুলে যাওয়া হবে না।

তালিকা হালনাগাদের মাধ্যমে আগামী দিনে আরও শহীদদের নাম যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় নিয়মিতভাবে এই তালিকা পর্যালোচনা ও প্রমাণাদি যাচাই করে চলবে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সরকারি এই গেজেট প্রকাশিত হওয়া দেশের গণতন্ত্রের প্রতি বিশ্বাস এবং শহীদদের আত্মত্যাগের মূল্যায়ন হিসেবে ধরা হচ্ছে। শহীদদের তালিকা বৃদ্ধি দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় রচনা করবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি শক্তিশালী প্রেরণা হবে।

Inga kommentarer hittades