close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

যু ব লী গ নেতা পেলেন ‘জুলাই যো দ্ধা’ স্বাস্থ্য কার্ড

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
যুদ্ধ না করেও ‘জুলাই যোদ্ধা’ কার্ড পেলেন যুবলীগ কর্মী। স্থানীয়দের প্রতিবাদে প্রশাসনের অস্বস্তি, তদন্তে নামছে মন্ত্রণালয়।..

গফরগাঁওয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে যুবলীগ কর্মী মো. তাঁরা মিয়া। কোন রকম আন্দোলন বা প্রমাণ ছাড়াই তিনি পেয়ে গেছেন 'জুলাই যোদ্ধা'দের জন্য বরাদ্দ বিশেষ স্বাস্থ্য কার্ড, যা ইতোমধ্যে গোটা এলাকায় তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

বুধবার (১৮ জুন) বিকেলে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে 'জুলাই যোদ্ধা'দের মাঝে আনুষ্ঠানিকভাবে বিতরণ করা হয় স্বাস্থ্য কার্ড। এ সময় বেশ কয়েকজন প্রকৃত যোদ্ধার পাশে দাঁড়িয়ে কার্ড নিতে দেখা যায় যুবলীগ কর্মী মো. তাঁরা মিয়াকে, যিনি স্থানীয়ভাবে রাজনৈতিক পরিচয়ে পরিচিত হলেও তাঁর 'জুলাই আন্দোলন' অংশগ্রহণের কোনো ইতিহাস জানা নেই।

এ ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন—“একজন রাজনৈতিক কর্মী, যাঁর কোনো আন্দোলনের ইতিহাস নেই, তিনি কিভাবে 'জুলাই যোদ্ধা' কার্ড পেতে পারেন?”

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এন.এম. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন,বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমরা কেবল কেন্দ্রীয় মন্ত্রণালয়ের গেজেট অনুযায়ী কার্ড বিতরণ করেছি।

তিনি আরও জানান, মো. তাঁরা মিয়ার স্থায়ী ঠিকানা গফরগাঁও হলেও, তিনি আবেদন করেছিলেন ঢাকায়। মন্ত্রণালয়ের গেজেটেই তাঁর নাম ছিল।

উপজেলা প্রশাসন জানায়, ঘটনাটি জানার পর তারা তৎক্ষণাৎ মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি অবহিত করেছেন। ইউএনও বলেন,যদি ওই ব্যক্তি জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কোনো বৈধ ও সত্য প্রমাণাদি দিতে না পারেন, তাহলে গেজেট বাতিলসহ দাপ্তরিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে অনুষ্ঠানটির সভাপতি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ জামাল উদ্দিনও জানান,আমরা শুধু তালিকা অনুযায়ী কার্ড বিতরণ করেছি। তবে এমন ঘটনা দুঃখজনক।

স্থানীয় অনেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় জানান,যারা আসলেই ২০০৭ সালের ২০ জুলাইয়ের আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল, তাদের অনেকের নাম নেই। অথচ রাজনৈতিক পরিচয়ের জোরে একজন এভাবে কার্ড পেয়ে যান—এটা সম্পূর্ণ অনৈতিক ও অসম্মানজনক।

এই ঘটনার মাধ্যমে প্রশ্ন উঠছে সরকারি গেজেট ও তালিকা তৈরির স্বচ্ছতা নিয়ে। প্রকৃত আন্দোলনকারীরা এই ‘ভুল’ গেজেটকে অপমান হিসেবে দেখছেন।

‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে বিশেষভাবে চিহ্নিত করা হয় ২০০৭ সালের ২০ জুলাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়কার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের। সরকার তাদের জন্য সম্মানস্বরূপ স্বাস্থ্য কার্ড, চিকিৎসা সেবা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে।

তবে এসব সুবিধা বিতরণে যাতে প্রকৃত ব্যক্তিরা উপেক্ষিত না হন এবং রাজনীতিকভাবে প্রভাবশালীরা ফায়দা না তুলতে পারেন, তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের ভেতরেও আলাপ শুরু হয়েছে।

মো. তাঁরা মিয়ার ‘জুলাই যোদ্ধা’ কার্ড প্রাপ্তির ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন এবং মন্ত্রণালয় এখন তৎপর। তদন্তে যদি তার বিরুদ্ধে প্রমাণিত হয় যে তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়ে সুবিধা নিয়েছেন, তাহলে তার গেজেট বাতিল হতে পারে।

コメントがありません