close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঘোষণা ইরানের

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরায়েলের আগ্রাসনের কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে ইরান ঘোষণা দিল—নতুন হামলা মানেই সরাসরি প্রতিরোধ। আন্তর্জাতিক নীতিলঙ্ঘনের দায়ে পশ্চিমা শক্তিকে সতর্ক করলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাঘচি।..

ইরান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—যেকোনো নতুন সামরিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দেশটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত। পররাষ্ট্রনীতির ময়দানে তেহরান তাদের অবস্থান আরও কঠোরভাবে জানিয়ে দিয়েছে। মঙ্গলবার এক গুরুত্বপূর্ণ ফোনালাপে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি গ্রীসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিওর্গোস জেরাপেট্রিটিস-কে এ বিষয়ে সরাসরি সতর্ক করেছেন।

এই টেলিফোন সংলাপে আরাঘচি বলেন, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র যে আগ্রাসী কৌশল গ্রহণ করেছে, তা শুধু মধ্যপ্রাচ্যের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্য বিপজ্জনক। পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রেজোলিউশন ২২৩১ ভেঙে এই দেশ দুটি আন্তর্জাতিক আইনকেই তুচ্ছ করছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “এর ফলাফল হতে পারে ভয়াবহ। বিশ্বশান্তির ভারসাম্য ভেঙে পড়তে পারে।”

আরাঘচি আরও বলেন, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান আলোচনা চলাকালেই ইসরায়েল যে সামরিক আগ্রাসন চালিয়েছে, তা কেবল কূটনৈতিক শিষ্টাচার নয়—আন্তর্জাতিক কূটনীতির মৌলিক মূল্যবোধের ওপরই আঘাত। তার ভাষায়, “গাজায় গণহত্যা ও অপরাধের জন্য ইসরায়েল দায়মুক্তি পাচ্ছে। এটাই এই অঞ্চলের নিরাপত্তাহীনতার প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে।”

বিশেষভাবে গাজার মানবিক বিপর্যয়ের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “গণহত্যা এখন রূপ নিয়েছে রাষ্ট্রীয় নীতিতে। ইসরায়েলের শাসকগোষ্ঠী পার পেয়ে যাচ্ছে বারবার। আর পশ্চিমারা চুপ করে আছে। এটা বিশ্বের নৈতিক পরাজয়।”

ইরানের সাম্প্রতিক প্রতিক্রিয়া ছিল জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদের আলোকে আত্মরক্ষার অধিকার বলে উল্লেখ করেন আরাঘচি। তিনি বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে সামরিক আগ্রাসন, পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা, এবং সার্বভৌমত্বের ওপর হুমকির প্রতিক্রিয়াতেই আমরা সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছি। এটা কোনো আগ্রাসী প্রতিক্রিয়া নয়, বরং আত্মরক্ষার বাধ্যতামূলক পদক্ষেপ।”

তিনি আরও জানান, ইরানের সেনাবাহিনী এখন যেকোনো নতুন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত আছে। “এবারের প্রতিক্রিয়া হবে আরও বেশি ব্যাপক, আরও বেশি শক্তিশালী,” বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

গ্রিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিওর্গোস জেরাপেট্রিটিস এসময় গাজায় নিহত অসংখ্য ইরানি নাগরিকের জন্য গভীর শোক প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এই ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি আমাদের বিবেককে নাড়া দিচ্ছে। আমরা গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির পক্ষে।”

তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, বর্তমান যুদ্ধবিরতি অব্যাহত থাকবে এবং মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি শিগগিরই কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের দিকে এগোবে।

ইরানের পররাষ্ট্রনীতি এবার একেবারে স্পষ্ট—কূটনীতি যদি সম্মান না পায়, তাহলে প্রতিরোধ হবে একমাত্র জবাব। আর পশ্চিমাদের নীরবতা বা একচোখা দৃষ্টিভঙ্গি মধ্যপ্রাচ্যকে আরও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল এই হুঁশিয়ারিকে কতটা গুরুত্ব দেয় এবং বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো এই ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেয়।

Aucun commentaire trouvé