জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার প্রধানকে আর ঢুকতে না দেওয়ার ঘোষণা ইরানের..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরান জাতিসংঘ পরমাণু সংস্থার প্রধানকে প্রবেশ নিষেধ করেছে এবং পরমাণু স্থাপনায় নজরদারি ক্যামেরা বসাতে দিচ্ছে না, উত্তেজনার মাঝে সহযোগিতা স্থগিত ঘোষণা।..

জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ-এর প্রধান রাফায়েল গ্রোসিকে ইরানে ঢুকতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইরান। পাশাপাশি, ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে আইএইএ’র নজরদারি ক্যামেরা বসানোর অনুমতি দেয়া হবে না বলে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি জানিয়েছেন।

এই ঘোষণা আসে এমন সময় যখন ইরান ও আইএইএ-এর মধ্যে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করছে। বিশেষত ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক সামরিক হামলার পর থেকে পরমাণু সংক্রান্ত নজরদারি ও স্বচ্ছতা নিয়ে দ্বন্দ্ব আরও বাড়ছে।

ইরানের সরকারি বার্তাসংস্থা আইআরএনএ-এর বরাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, “আমরা আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাকে আমাদের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোতে কোনও ক্যামেরা বসাতে দেব না। সংস্থার মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসির ইরানে প্রবেশও নিষিদ্ধ থাকবে।”

ইরানের পার্লামেন্ট সম্প্রতি একটি আইন পাস করেছে, যেখানে আইএইএ-এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই আইন বিশেষভাবে গত ১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর প্রণীত।

সেই সংঘর্ষে ইসরায়েল ইরানের সামরিক, পারমাণবিক ও বেসামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ওই হামলায় কমপক্ষে ৬০৬ জন নিহত ও ৫৩৩২ জন আহত হন। উত্তরে ইরানও ইসরায়েলের ওপর মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালায়। হিব্রু ইউনিভার্সিটি অব জেরুজালেমের তথ্য অনুযায়ী, এতে অন্তত ২৯ জন নিহত ও ৩৪০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।

শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত ২৪ জুন থেকে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়, তবে এর মধ্যেও পারমাণবিক সংস্থার সাথে ইরানের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে।

এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির পেছনে রয়েছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধপূর্ণ নীতি, যা ইরানকে কঠোর অবস্থান নিতে বাধ্য করছে। বিশ্ব সম্প্রদায় ইরান ও আইএইএ-এর মধ্যে এই দ্বন্দ্বের দ্রুত সমাধান চায়, যাতে পারমাণবিক শান্তি নিশ্চিত করা যায় এবং অঞ্চল স্থিতিশীল থাকে।

তবে, ইরানের এই নতুন পদক্ষেপ পরমাণু নিরীক্ষা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। বিশ্ব রাজনীতিতে ইরান ও পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্ক আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের মধ্যে এই সংকট নিয়ে কূটনৈতিক আলোচনা জোরালো হচ্ছে। অনেক দেশ জাতিসংঘের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধান খোঁজার আহ্বান জানিয়েছে।

তবে, ইরানের এই অবস্থান থেকে বোঝা যাচ্ছে যে দেশটি তার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করবে না। ভবিষ্যতে এই সংকট আরও দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা বিশ্বশান্তির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

ইরান ও আইএইএ-এর মধ্যে এই সংকট কিভাবে সমাধান হবে তা বিশ্বনেতাদের নজরদারির বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘমেয়াদী শান্তির জন্য কূটনৈতিক পথে এগোনোর বিকল্প কম।

Walang nakitang komento


News Card Generator