close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

জাতিসংঘ মহাসচিবের সফর: বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও রোহিঙ্গা সংকটে নতুন আশার আলো..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
চার দিনের গুরুত্বপূর্ণ সফর শেষে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশ ছেড়েছেন। তার এ সফর রাজনৈতিক সংস্কার, রোহিঙ্গা সংকট ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন আশার আলো জাগিয়েছে। কূটনীতিকদের মতে, এ..

রাজনৈতিক সংকট ও গণতন্ত্রের পথে জাতিসংঘের নতুন দিকনির্দেশনা

জাতিসংঘ মহাসচিবের সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফর অত্যন্ত কৌশলগত ও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তিনি সরাসরি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে অংশ নেন এবং বাংলাদেশের চলমান সংস্কার প্রক্রিয়ায় সমর্থন জানান। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জাতিসংঘের এ আশ্বাস বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থা বাড়াবে এবং গণতন্ত্রের পথে দেশকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।

এ সফরে গুতেরেস জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, তরুণ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি স্পষ্ট করেন যে, বাংলাদেশ বর্তমানে গণতন্ত্রের এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে রয়েছে, যেখানে শান্তি, সংলাপ ও ঐকমত্য খুবই প্রয়োজনীয়।


 রোহিঙ্গা সংকট: আন্তর্জাতিক সংলাপ ও করিডোর তৈরির আলোচনা

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংকট এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিয়েও জাতিসংঘের মহাসচিব বিস্তারিত আলোচনা করেন। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে আরাকান আর্মির সঙ্গে সংলাপ জরুরি।”

এছাড়া, তিনি জানান—বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠানোর একটি চ্যানেল তৈরির আলোচনা চলছে। তবে কূটনীতিকরা মনে করছেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে বাংলাদেশকে এই করিডোর দিতে বলা যুক্তিযুক্ত হবে না।


 বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিক্রিয়া

জাতিসংঘ মহাসচিব বিএনপি, জামায়াতসহ সাতটি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দলগুলো তাদের নিজ নিজ অবস্থান তুলে ধরেছে—

 বিএনপি: দ্রুত সংস্কার সম্পন্ন করে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছে।
 জামায়াতে ইসলামী: টেকসই গণতন্ত্র ও অবাধ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে।
 জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি): গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে।

গুতেরেস বলেছেন, “সংস্কার কীভাবে হবে, তা রাজনৈতিক দলগুলোকেই নির্ধারণ করতে হবে। জাতিসংঘ পাশে থাকবে।”


 রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

সাবেক রাষ্ট্রদূত এম সফিউল্লাহ মনে করেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে চীনকে যুক্ত করা জরুরি। তিনি বলেন, “এ মাসে প্রধান উপদেষ্টা চীন সফরে যাচ্ছেন, যেখানে এ বিষয়ে সহযোগিতা চাওয়া উচিত।”

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “মানবিক করিডোর দিলেই যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে, তা বলা যায় না। এটি শুধু আন্তর্জাতিক আলোচনার অংশ হতে পারে।”


 জাতিসংঘের ভবিষ্যৎ ভূমিকা: বাংলাদেশের জনগণের জন্য কতটা আশাব্যঞ্জক?

জাতিসংঘ মহাসচিবের এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে এক নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার রক্ষা এবং রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘ যে পাশে থাকবে—এমন প্রতিশ্রুতি অনেকের মধ্যে আস্থার জন্ম দিয়েছে।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিসংঘের এ সংলাপের প্রতীকী গুরুত্ব রয়েছে, তবে বাস্তবসম্মত সমাধান অর্জনের জন্য বাংলাদেশকেই নেতৃত্ব নিতে হবে। অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ঐক্য এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মিলিয়ে ভবিষ্যতে এ সংকট কতটা সমাধান হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

کوئی تبصرہ نہیں ملا


News Card Generator