close
লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!
জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের এই বক্তব্য নতুন করে আলোচনার ঝড় তুলেছে। জাতীয় নির্বাচন আগে না স্থানীয় নির্বাচন—এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে মতপার্থক্য। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকার স্থানীয় নির্বাচন করতে চাইলে তা জাতীয় নির্বাচনের আগেই করতে হবে। কারণ, জাতীয় নির্বাচনের পর তাদের ক্ষমতা নির্বাচিত সরকারের হাতে হস্তান্তর করতে হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান
বিএনপিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনকে অগ্রাহ্য করছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মূল কাজ হচ্ছে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন এবং নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। এর বাইরে অন্য কোনো উদ্যোগ জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে।
অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক কমিটি মনে করে, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়া উচিত। তাদের মতে, এটি জাতীয় নির্বাচনের জন্য একটি প্রস্তুতি হিসেবে কাজ করবে এবং স্থানীয় পর্যায়ের জনগণের সেবা প্রদানের পথ উন্মুক্ত করবে। গণসংহতি আন্দোলনসহ কিছু সংগঠন সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষে।
সংস্কারের পরিকল্পনা
স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করছে। বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ এবং সিটি করপোরেশন আলাদা আলাদা আইনের অধীনে চলে। কমিশনের প্রস্তাব, একটি অভিন্ন আইনের অধীনে সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হবে। পাশাপাশি, সব স্তরের নির্বাচনের দিন একত্র করার পরিকল্পনাও রয়েছে।
কমিশনের আরেকটি বড় প্রস্তাব হলো, সরাসরি মেয়র বা চেয়ারম্যান নির্বাচন বাতিল করে জনপ্রতিনিধিদের ভোটে তাদের নির্বাচন করা। তবে এই পদ্ধতি দুর্নীতি বাড়াতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
উন্নয়নের আড়ালে শঙ্কা
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পরিকল্পনা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে অনাস্থা বাড়তে পারে। অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহর মতে, "সরকারের উচিত হবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে আস্থার পরিবেশ তৈরি করা। অন্যথায় পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।"
জাতীয় নির্বাচন থেকে স্থানীয় নির্বাচন: প্রশ্নবিদ্ধ অগ্রাধিকার
অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি স্থানীয় সরকারের নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনার কথা বললেও এখন পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট ঘোষণা আসেনি। তবে, সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, চলতি বছরের জুন বা তার পর স্থানীয় নির্বাচন আয়োজন সম্ভব।
এই পরিকল্পনা কি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতিফলন, নাকি রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ানোর নতুন একটি উপকরণ? সময়ই দেবে এই প্রশ্নের উত্তর।
Aucun commentaire trouvé