জামায়াতের আমিরের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল যমুনায়

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে আলোচনার টেবিলে জামায়াতে ইসলামি। দলটির আমির শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পৌঁছেছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের..

জামায়াতের প্রতিনিধিদলের যমুনা আগমন: আলোচনার নতুন ধারা?
ঢাকা, ২৪ মে — দেশের রাজনীতিতে উত্তপ্ত আবহে এবার আলোচনার মঞ্চে জামায়াতে ইসলামী। দলের শীর্ষ নেতা ও আমির শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী প্রতিনিধিদল শনিবার রাত আটটার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পৌঁছায়। তাদের লক্ষ্য— অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক।

এই বৈঠকটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ এবং সমঝোতার প্রয়াস জোরদার হয়েছে। বিশেষ করে বিএনপি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জামায়াতসহ বেশ কয়েকটি বিরোধী দল নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি জোরালো করেছে।

জামায়াতের অবস্থান স্পষ্ট করতে বৈঠক?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বৈঠক জামায়াতের অবস্থান পরিষ্কার করার একটি কৌশল হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে দলটি রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা অবস্থানে থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে তারা আবার সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে।

বিশেষ করে ঢাকার রাজপথে জামায়াতের কর্মসূচি, জনসভা এবং নেতাদের পুনঃসংগঠিত হওয়ার তৎপরতা ইঙ্গিত দেয় যে, তারা নতুন করে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর এই পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক তাদের জন্য রাজনৈতিক বৈধতা আদায়েরও একটি কৌশল হতে পারে।

বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের পরপরই জামায়াত— কাকতালীয়, না পরিকল্পিত?
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, জামায়াতের সঙ্গে এই বৈঠকের ঠিক আগেই প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বিএনপির নেতাদের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সেরেছেন। বিএনপির সেই আলোচনায় আগাম নির্বাচনের দাবি, রাজনৈতিক মামলার নিষ্পত্তি, এবং সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

তবে এর ঠিক পরপরই জামায়াতের প্রতিনিধিদলের যমুনায় প্রবেশ রাজনৈতিক মহলে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এটি কি একটি সমন্বিত কৌশলের অংশ, নাকি আলাদা আলাদা দলগুলোর নিজস্ব উদ্যোগ— তা এখনও স্পষ্ট নয়।

রাত সাড়ে আটটায় এনসিপির সঙ্গেও বৈঠক
জামায়াতের সঙ্গে আলোচনার পরপরই রাত সাড়ে আটটার দিকে প্রধান উপদেষ্টার আরেকটি বৈঠক রয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সঙ্গে। এনসিপি সম্প্রতি কয়েকটি বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জোরালোভাবে তুলে ধরছে এবং একটি জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট গঠনের চেষ্টাও করছে।

এই ধারাবাহিক বৈঠকগুলো বিশেষজ্ঞদের মতে নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্য এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ খুঁজে পাওয়ার উদ্যোগ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।


প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াতের এই বৈঠক নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক মুহূর্ত। এই বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়, তা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে রাজনৈতিক মহলে এই বৈঠক ঘিরে নানা জল্পনা ও বিশ্লেষণ শুরু হয়ে গেছে। অনেকেই মনে করছেন, এটি শুধু জামায়াতের জন্য নয়, বরং দেশের সার্বিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের জন্যও একটি টার্নিং পয়েন্ট হয়ে উঠতে পারে।

কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি


News Card Generator