close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ইসরাইলে ফের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইয়েমেনর, বেন-গুরিয়নের ফ্লাইট স্থগিত..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরাইলের বুকে আবারও আঘাত হেনেছে ইয়েমেনি ক্ষেপণাস্ত্র। লক্ষ্যবস্তু ছিল তেলআবিবের বেন-গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ইসরাইলি বাহিনীর দাবি অনুযায়ী ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রতিহত করা হয়েছে, তবে নিরাপত্তা শঙ্কায় ফ..

ইসরাইলে আবারও ইয়েমেনি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে, যার লক্ষ্য ছিল তেলআবিবের গুরুত্বপূর্ণ বেন-গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। রোববার সন্ধ্যায় সংঘটিত এই হামলার জবাবে তাৎক্ষণিকভাবে বিমানবন্দরের সকল ফ্লাইট স্থগিত করা হয়। ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী দাবি করেছে, তারা সফলভাবে হামলাটি প্রতিহত করেছে।

লেবাননের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম আল-মায়াদিন এবং ইসরাইলি পত্রিকা টাইমস অব ইসরাইল জানিয়েছে, ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত সেনাবাহিনী থেকেই এই হামলা চালানো হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রতিহত করা হলেও তার কিছু অংশ দক্ষিণ হেব্রনের পাহাড়ি এলাকায় গিয়ে পড়ে বলে জানায় ইসরাইলি সামরিক সূত্র। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আকাশে সাইরেন বেজে ওঠার কয়েক মিনিট আগেই তারা সতর্কবার্তা পেয়েছিলেন। মোবাইল ফোনে পাঠানো প্রাথমিক সতর্কতা পেয়ে অধিকাংশ মানুষ নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেন।

এই নিয়ে গত চার দিনের মধ্যে তৃতীয় এবং চলতি মাসের পঞ্চম হামলা এটি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইয়েমেনি হামলা এখন নিত্যদিনের চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। জেরুজালেম, ডেড সি-সংলগ্ন অঞ্চল ও দক্ষিণ পশ্চিম তীরের ইহুদি বসতিগুলোতেও বারবার হামলার সতর্কতা শোনা যাচ্ছে, যা ইসরাইলি জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।

চলতি মাসের শুরুতে একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র বেন-গুরিয়ন বিমানবন্দরের মাঠে আঘাত হানে, যার ফলে বিশাল গর্ত তৈরি হয় এবং অন্তত ৬ জন আহত হন। এ ঘটনায় ইসরাইলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। যদিও ইসরাইল দাবি করে, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি বেশিরভাগ হামলাই ঠেকাতে সক্ষম, বাস্তবে প্রতিটি হামলার পর জনগণের মনে সংশয় আরও বাড়ছে।

আল-মায়াদিন এবং ইরানি সংবাদমাধ্যম মেহের নিউজ জানিয়েছে, রোববারের হামলার বিষয়ে এখনও হুথি সমর্থিত ইয়েমেনি বাহিনীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া হিসেবেই ইয়েমেন এই আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। এবং এটি শুধু প্রতিশোধ নয়, বরং আঞ্চলিক বার্তা।

বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে সংঘাতের বিস্তার গাজা থেকে বহু দূরবর্তী দেশ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ছে। শুধু ইয়েমেন নয়, লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইরান এবং সিরিয়াও একাধিকবার ইসরাইলকে উদ্দেশ্য করে সামরিক তৎপরতা চালিয়েছে। যার ফলে ইসরাইলের ওপর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী বহুমুখী চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদি এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকে, তাহলে এটি একটি পূর্ণাঙ্গ আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নিতে পারে। বেন-গুরিয়নের মত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার চেষ্টা এবং বিমান চলাচল স্থগিত হওয়া কেবল প্রতীকী বার্তাই নয়, এটি ইসরাইলের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা কাঠামোতেও প্রভাব ফেলছে।

এদিকে, সাধারণ নাগরিকদের মধ্যেও এই হামলাগুলো নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। প্রতিনিয়ত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার সতর্কতায় জীবনযাপন করা মানে এক প্রকার স্থায়ী যুদ্ধাবস্থা। পরিস্থিতির অবনতির কারণে অনেকে ইসরাইল ছাড়ার কথাও ভাবছেন বলে জানিয়েছে একাধিক ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম।


সংক্ষেপে, ইসরাইলের গাজা যুদ্ধ যে এখন আর একক সীমানায় সীমাবদ্ধ নেই, তা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে ইয়েমেন থেকে চালানো একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায়। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন, এই সংঘাত এক ভয়ঙ্কর ও অপ্রত্যাশিত মোড় নিতে চলেছে।

لم يتم العثور على تعليقات