close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের ডাক জবি উপাচার্যের, গাজাবাসীর পাশে দাঁড়ানোর সাহসী বার্তা!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তাল প্রতিবাদ! ইসরায়েলি পণ্যে নিষেধাজ্ঞা চাইলেন উপাচার্য নিজেই। গাজার নির্যাতিত মুসলিমদের জন্য গর্জে উঠলো শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই। কী বললেন উপাচার্য? কীভাবে জেগে উঠছে বাংলাদেশে..

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গর্জে উঠল প্রতিবাদ—ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের আহ্বান উপাচার্যের!

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) অনুষ্ঠিত এক জোরালো সংহতি সমাবেশে গাজার মুসলিমদের ওপর চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম সরাসরি আহ্বান জানিয়েছেন—ইসরায়েলের সব পণ্য বয়কট করতে। একইসঙ্গে দেশি পণ্য ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করে গাজাবাসীর জন্য আর্থিক সহায়তার আহ্বানও জানান তিনি।

সোমবার (৭ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত ‘ইসরায়েলের বর্বর হামলার প্রতিবাদ এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি’ শীর্ষক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য। তিনি বলেন, “মাসের পর মাস ধরে ফিলিস্তিনে নির্মম গণহত্যা চলছে। দেরিতে হলেও আমরা প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর তুলেছি। আমাদের হাতে হয়ত কিছুই নেই, কিন্তু আমাদের দোয়া যদি আল্লাহ কবুল করেন—তবে হয়তো ওদের দুঃখের অবসান হবে।”

এই সংহতি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোশাররফ হোসেন। সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন। বক্তব্য রাখেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেনসহ একাধিক শিক্ষক।


ছাত্রদের বিক্ষোভে গর্জে উঠল প্রতিবাদের স্লোগান

শিক্ষকদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সরব ভূমিকা রাখে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াতে। জোহরের নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন, যা বাহাদুর শাহ পার্ক হয়ে ক্যাম্পাসে এসে শেষ হয়। সেখানে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’, ‘বদরের হাতিয়ার গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘উহুদের হাতিয়ার গর্জে ওঠো আরেকবার’—এই রকম ইসলামী চেতনায় উজ্জীবিত স্লোগান তুলে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে।

শিক্ষার্থীদের সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক ও কর্মকর্তা সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সবার কণ্ঠে ছিল একটাই দাবী—ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে বিশ্ব মুসলিমদের একত্রিত হতে হবে।


সরকারকে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদের আহ্বান

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন সমাবেশে বলেন, “আমরা শুধু সংহতি নয়, সরকারের কাছেও আহ্বান জানাচ্ছি—ইসরায়েলের এই গণহত্যার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানো হোক। আর আজকের এই মঞ্চ থেকে আল্লাহর নামে প্রতিজ্ঞা করছি—ইসরায়েলের সব পণ্য বর্জন করবো।”


ছাত্র সংগঠনগুলোর শক্ত বার্তা: এখন আর শুধু সমবেদনায় হবে না!

শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি রাকিব বলেন, “আমাদের এখন কথা বলার সময় নেই, আমাদের এখন অ্যাকশনের সময়। শুধু সমবেদনা, মিছিল আর বক্তব্য নয়—আমাদের মুসলিম দেশগুলোকে জাগাতে হবে। ইরান, ইরাক, সৌদি আরব, মিসর—সবাইকে একসাথে জেগে উঠতে হবে। না হলে আজ ফিলিস্তিন, কাল হয়ত আমাদের দেশ।”

জবি ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, “আজ কোথায় মুসলিম উম্মাহ? কোথায় সেই ঐক্য? আমাদের নবীজির জমিন আজ রক্তে ভেজা। মুসলিম বিশ্বকে এখন আত্মনির্ভর হতে হবে। এমন শক্ত অবস্থানে যেতে হবে যেন আমরা কারো ওপর নির্ভর না করি—না অস্ত্রের জন্য, না খাদ্যের জন্য।”


আকুতি ও আশাবাদ: জবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া বার্তা

সকল বক্তার কণ্ঠেই ছিল একটাই দাবি—ফিলিস্তিনে মুসলমানদের ওপর এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হোক। সংহতি সমাবেশের শেষে দোয়ার মাধ্যমে গাজার শহীদদের জন্য প্রার্থনা করা হয়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রতিবাদ ছিল নিছক আনুষ্ঠানিকতা নয়—বরং এটি ছিল মুসলিম উম্মাহর এক জাগ্রত বিবেকের কণ্ঠস্বর। শিক্ষার্থীদের মুখে উচ্চারিত প্রতিটি স্লোগান, শিক্ষকদের হৃদয়বিদারক বক্তব্য যেন গাজায় বসবাসরত নিরীহ মুসলিমদের আর্তনাদ হয়ে বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে যায়।


শেষ কথাঃ
আজ জবির ক্যাম্পাস থেকে যে আওয়াজ উঠেছে, তা যেন দেশের প্রতিটি মানুষ, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের বিবেককে নাড়া দেয়। ফিলিস্তিনের জন্য কেবল দোয়া নয়, বরং দায়িত্বশীল অবস্থান নেওয়ার এখনই সময়।

Tidak ada komentar yang ditemukan