close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ইসরায়েলের কমান্ড সেন্টার-গোয়েন্দা দপ্তরে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরানের পাল্টা প্রতিশোধ শুরু—ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে সামরিক কমান্ড সেন্টার, গোয়েন্দা সদর দপ্তর ও শিবিরে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত। যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ দিকে যাচ্ছে।..

মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা এক নতুন মোড় নিয়েছে। এবার আর সীমিত পর্যায়ে নয়—ইরান সরাসরি আঘাত হেনেছে ইসরায়েলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তিনটি সামরিক স্থাপনায়। এর মধ্যে রয়েছে সামরিক বাহিনীর কমান্ড সেন্টার, গোয়েন্দা বিভাগের সদর দপ্তর এবং সেনা গোয়েন্দা শাখার একটি প্রশিক্ষণ শিবির। ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের এই হামলায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের খবর নিশ্চিত করেছে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা ইরনা (IRNA)

এই হামলা হয়েছে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বিয়ের শেভাতে, যেখানে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ স্ট্র্যাটেজিক স্থাপনাগুলো অবস্থিত। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ইরান একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে বলে জানায় ইরনা। তারা এটিকে একটি “সুনির্দিষ্ট এবং সফল আঘাত” হিসেবে বর্ণনা করে।

একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো, ইসরায়েলি গোয়েন্দা সদর দপ্তরের আশপাশেই অবস্থিত সোরোকা মেডিকেল সেন্টার নামের একটি হাসপাতালও ক্ষেপণাস্ত্র বিস্ফোরণের ধাক্কায় আংশিক ক্ষতির মুখে পড়ে। যদিও সরাসরি আঘাত হানেনি ক্ষেপণাস্ত্র, তবে বিস্ফোরণের শকওয়েভে জানালার কাঁচ ভেঙে যায়, এবং হাসপাতালের একাধিক ওয়ার্ডে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ইসরায়েল দাবি করছে, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই গত ১৩ জুন শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টা থেকে ইরানের বিভিন্ন এলাকায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী (IAF)। তারা এই অভিযানকে ‘অপারেশন দ্য রাইজিং লায়ন’ নামে চালু করে।

ইসরায়েলের এই আকস্মিক আগ্রাসনের জবাব দিতে দেরি করেনি তেহরান। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরান নিজেদের পাল্টা অভিযানের নাম দেয় ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’। শুরু হয় দু’দেশের মধ্যে সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধ। এতে একদিকে যেমন ইরানের সামরিক বাহিনী সরাসরি ইসরায়েলের ভেতরে হামলা চালাচ্ছে, অন্যদিকে ইসরায়েলও ইরানের নানা বেসামরিক ও সামরিক স্থাপনায় আঘাত করছে।

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ইরানে ৬০০ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ১৩০০ জন। এই সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। হাসপাতালগুলোতে রক্ত এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

অন্যদিকে, ইসরায়েলের পক্ষ থেকে হতাহতের বিষয়ে নির্দিষ্ট সংখ্যা প্রকাশ করা হচ্ছে না। সামরিক ও গোয়েন্দা স্থাপনায় সরাসরি হামলার কারণে দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও বেশি সংকটাপন্ন হয়ে উঠেছে।

এই পরিস্থিতিতে এখনও জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে কোনো শক্ত অবস্থান দেখা যায়নি। যদিও কূটনৈতিক মহল আশঙ্কা করছে, এই সংঘাত আরও বিস্তৃত হয়ে যেতে পারে—যা শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা বিশ্বকেই প্রভাবিত করতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সরাসরি সামরিক ও গোয়েন্দা ঘাঁটিতে আঘাত করার মতো ঘটনা খুব কমই দেখা যায়, আর এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতের বড় কোনো যুদ্ধের ইঙ্গিত হতে পারে।

মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের ডামাডোল এখন আর গোপনে নয়, খোলামেলাভাবে চলছে। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার এই সামরিক সংঘর্ষ শুধু রাজনৈতিক কিংবা প্রতিরক্ষা নয়, এটি ক্রমেই এক মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নিচ্ছে। পাল্টা-পাল্টি অভিযান, বিমান হামলা এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ—সব কিছু মিলে দুই পরাশক্তির যুদ্ধবাজি হয়তো গোটা অঞ্চলকে একটি আগ্নেয়গিরির মতো ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে চলেছে।

لم يتم العثور على تعليقات


News Card Generator