close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ইস রা য়ে ল-ই রা ন সং ঘাত: জরুরি বৈঠক ডেকেছে জাতিসংঘ নি রা পত্তা পরিষদ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরান-ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলায় ছড়িয়ে পড়েছে যুদ্ধের শঙ্কা। যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে জাতিসংঘে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইরান। এবার পরিস্থিতি শান্ত করতে নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক — কী হবে পরিণতি?..

মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে আবারও যুদ্ধের ঘনঘটা। ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনাকর সংঘর্ষ নিয়ে এবার জরুরি বৈঠকে বসছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। আগামী শুক্রবার, ২০ জুন স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা

এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের ডাক এসেছে ইরানের অনুরোধে, যেখানে চীন, রাশিয়া ও পাকিস্তান প্রকাশ্য সমর্থন জানিয়েছে। ইরান দাবি করেছে, ইসরায়েলের নেতৃত্বাধীন সাম্প্রতিক বিমান হামলায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িত। এই অভিযানের পেছনে রয়েছে অবৈধ সামরিক উদ্দেশ্য ও পরিকল্পিত উস্কানি, যা ইতোমধ্যেই হাজারো মানুষের প্রাণহানি ঘটিয়েছে এবং গোটা অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে।

গত ১৩ জুন ইসরায়েল একটি আকস্মিক হামলায় ইরানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনা, বিশেষত পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিগুলোতে বোমা বর্ষণ করে। হামলার ভয়াবহতায় স্তব্ধ হয়ে যায় গোটা ইরান। বেশ কিছু স্থানে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় আবাসিক ও সেনাঘাঁটি এলাকা।

এর প্রতিক্রিয়ায়, ইরানও পাল্টা জবাব দিতে দেরি করে না। কয়েকশ ড্রোন এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটিগুলোতে ব্যাপক প্রতিশোধমূলক হামলা চালায় দেশটি। এই পাল্টাপাল্টি আক্রমণে দুই দেশের মধ্যে ছয়দিন ধরে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করে, যার ফলে ব্যাপক প্রাণহানি এবং অর্থনৈতিক ও সামরিক ক্ষতি হয়।

ইরান জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ছিল, যা আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, "আমরা জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যেন অবিলম্বে এই অনৈতিক ও অবৈধ আগ্রাসনের জবাব দেওয়া হয়। বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তা আজ হুমকির মুখে।

ইরানের এই অনুরোধে রাশিয়া, চীন ও পাকিস্তান দ্রুত সাড়া দিয়েছে এবং জরুরি বৈঠক আয়োজনের ব্যাপারে সমর্থন জানিয়েছে। ফলে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বাধ্য হয়ে বিষয়টি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা ডেকেছে।

আন্তর্জাতিক রাজনীতিবিদ ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এই সংঘাত যদি কূটনৈতিকভাবে সমাধান না হয়, তবে এটি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরি করতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যেই নিজেদের সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক তেলবাজারে দেখা দিয়েছে ব্যাপক অস্থিরতা।

বিশ্লেষকরা আরো বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে সরাসরি সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখে, তবে এটি রাশিয়া-চীন জোটের মাধ্যমে এক নতুন ধরণের ব্লক-ভিত্তিক বিশ্ব সংঘর্ষে পরিণত হতে পারে।

জাতিসংঘের এই বৈঠকে হয়তো তাৎক্ষণিক কোনো সমাধান আসবে না, তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর এখন একটাই প্রশ্নের দিকে:
"এই সংঘাত কি আরও বিস্তৃত যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে?

ইরান ও ইসরায়েলের এই উত্তপ্ত সম্পর্ক শুধু দুই দেশের ব্যাপার নয়, এটি গোটা বিশ্বের শান্তি-নিরাপত্তার জন্য চরম হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সংকট সমাধানে জাতিসংঘের দায়িত্বশীল পদক্ষেপই এখন সময়ের দাবি।

Aucun commentaire trouvé