close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ইরানকে পারমাণবিক সহায়তা দিতে প্রস্তুত একাধিক দেশ – দাবি করলেন রাশিয়ার মেদভেদেভ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
মার্কিন হামলার পর ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র দিতে প্রস্তুত রয়েছে বেশ কয়েকটি দেশ—এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ। তার মতে, এ হামলা যুক্তরাষ্ট্রকে বড় সংঘাতের মুখে ঠেল..

ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র দিতে প্রস্তুত বেশ কয়েকটি দেশ — বিস্ফোরক মন্তব্য রুশ সাবেক প্রেসিডেন্ট মেদভেদেভের

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর বিমান হামলার পর রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ এক চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, বিশ্বের বেশ কিছু রাষ্ট্র এখন ইরানকে সরাসরি পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এমন বিস্ফোরক মন্তব্যে মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে।

রবিবার (২২ জুন) তুরস্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এক লাইভ প্রতিবেদনে মেদভেদেভের বক্তব্য তুলে ধরে। টেলিগ্রামে দেওয়া এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে তিনি বলেন, "ইরানের সঙ্গে সরাসরি পারমাণবিক সহযোগিতার জন্য বেশ কয়েকটি দেশ এখন প্রস্তুত।" যদিও তিনি এসব দেশের নাম প্রকাশ করেননি, তবে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন—রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া কিংবা চীন এ তালিকায় থাকতে পারে।

মেদভেদেভ আরও বলেন, “ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর এই হামলায় প্রকৃতপক্ষে উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। বরং, এটি তেহরানের নেতৃত্বকে রাজনৈতিকভাবে আরও শক্তিশালী করেছে।” তিনি মনে করেন, ইরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ও সম্ভাব্য পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়নের কাজ আগের চেয়েও জোরালোভাবে চালিয়ে যাবে।

এই রুশ রাজনীতিবিদের ভাষায়, যুক্তরাষ্ট্র এখন আরও একটি বড় আকারের সংঘাতের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, "যদি ইরানের মতো একটি পরমাণু সক্ষম রাষ্ট্র আক্রমণের শিকার হয়, তবে তার প্রতিক্রিয়ায় বিশ্ব কী ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে, তা কি ওয়াশিংটন বুঝতে পেরেছে?

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলার কড়া সমালোচনা করে। এক বিবৃতিতে বলা হয়, "সার্বভৌম রাষ্ট্রের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা বর্ষণ আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন। জাতিসংঘ সনদ এবং নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনাও এতে লঙ্ঘিত হয়েছে।" তারা একে একটি ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন সামরিক পদক্ষেপ’ আখ্যা দেয়।

আজ ভোরে যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান ইরানের অন্তত তিনটি পারমাণবিক স্থাপনার ওপর আক্রমণ চালায়। এরপর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বিবৃতিতে জানান, “আমাদের বিমান বাহিনী অত্যন্ত সফলভাবে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে আঘাত হেনেছে। এ পদক্ষেপ ইরানের পরমাণু হুমকি রোধে একটি শক্ত বার্তা।”

এই ঘোষণার পর থেকেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ বাড়ছে। বিশ্বের বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশ এবং স্বাধীন পর্যবেক্ষকরা বিষয়টিকে দ্বিতীয় এক উপসাগরীয় যুদ্ধের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতি শুধু মধ্যপ্রাচ্যে নয়, বরং পুরো বৈশ্বিক নিরাপত্তা কাঠামোয় প্রভাব ফেলবে। যদি সত্যিই কিছু দেশ ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ করে, তবে এটি শুধু ইসরায়েল নয়—আরও অনেক পশ্চিমা দেশের জন্য ভয়াবহ নিরাপত্তা হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

এদিকে, তেহরান থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, ইরানের প্রতিরক্ষা বাহিনী বর্তমানে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং যেকোনো পাল্টা হামলার জন্য প্রস্তুত।

মেদভেদেভের এই মন্তব্য কেবল রাশিয়ার অবস্থান নয়, বরং ভবিষ্যতের এক ভয়ঙ্কর আন্তর্জাতিক সংকটের ইঙ্গিত। পারমাণবিক অস্ত্রের মতো ভয়ংকর প্রযুক্তি যদি রাষ্ট্রীয় বিরোধে সরাসরি ব্যবহৃত হয়, তবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা যেন চোখ রাঙাচ্ছে বর্তমান বিশ্বকেই।

Geen reacties gevonden