ইরানের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে ইসরায়েলের ব্যাপক আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সামনে এসেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েল সরকারের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নে বলা হয়েছে, এই যুদ্ধে ইসরায়েলের প্রায় তিন বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
সুত্রের বরাতে জানা গেছে, ইরানের প্রতিশোধমূলক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সময় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তা প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা এই হামলায় ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক এবং নাগরিক অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
গত ১৩ জুন ভোরে ইসরায়েল তেহরানের বিরুদ্ধে হামলা শুরু করে। তারা টানা ১২ দিন ধরে ইরানের সামরিক, পারমাণবিক এবং আবাসিক এলাকা লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালায়। যুক্তরাষ্ট্রও ২২ জুন নাতানজ, ফরদো এবং ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ইসরায়েলের পক্ষে সমর্থন প্রকাশ করে।
অপরদিকে, ইরানের সামরিক বাহিনী হামলার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। ইসলামিক রিভ্যুলিউশনারি গার্ডস কর্পসের অ্যারোস্পেস ফোর্স ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে ২২টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়, যার ফলে নগর এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এই সংঘর্ষের ফলে ইসরায়েলের কৌশলগত ও অবকাঠামোগত ক্ষতি অত্যন্ত গুরুতর মাত্রায় বৃদ্ধি পায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানের এই পাল্টা হামলা ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বল দিকগুলোকে স্পষ্ট করেছে।
২৪ জুন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায়, দুই দেশের মধ্যে ১২ দিন ধরে চলা সংঘর্ষের বিরতি ঘোষণা করা হয়। তবে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ও অবস্থা এখনও অতীতের চেয়ে অনেক বেশি সংকটাপন্ন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এই যুদ্ধে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা ভবিষ্যতে এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করবে বলেও মন্তব্য করা হচ্ছে। বিশ্ব সম্প্রদায় এখনো দুই দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়াস চালাচ্ছে, তবে চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনা ও সামরিক প্রস্তুতি পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে।