close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ইরানের রকেট হামলায় ইসরাইলে নিহত ৩, আহত ৮০ জনের বেশি

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরান-ইসরাইল উত্তেজনা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। তেল আবিবের উপকণ্ঠে ভয়াল রকেট হামলায় প্রাণ গেল ৩ জনের, আহত অন্তত ৮০। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো আটকে আছে আরও অনেকে। যুদ্ধ যেন এক নতুন মোড় নিচ্ছে।..

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি হঠাৎ ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নিয়েছে। ইরানের ছোড়া রকেট ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রিশোন লেজিয়োন-এ আঘাত হানে শনিবার ভোররাতে, ফলে প্রাণ হারান কমপক্ষে ৩ জন এবং আহত হন ৮০ জনেরও বেশি

স্থানীয় সময় অনুযায়ী, সকাল ৪টার কিছু আগে বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। ইসরায়েলের জরুরি সেবা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে, বহু মানুষ ভাঙা ভবনের নিচে আটকে পড়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে প্যারামেডিক টিম ও উদ্ধারকর্মীদের বিশাল বহর সেখানে পাঠানো হয়।

 

এটি এক জটিল পরিস্থিতি। অনেক বাসিন্দা এখনো ভবনের ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকে আছে কিনা—তা খুঁজে বের করাই এখন আমাদের প্রধান লক্ষ্য।

এক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, একটি বাড়ির ছাদ পুরোপুরি ধসে পড়েছে এবং চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে কংক্রিটের স্ল্যাব ও ধাতব সরঞ্জাম। ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তাঁরা প্রাণপণে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে আটকে পড়া লোকদের উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছেন।

 

এই ভয়াল হামলার আগে, শুক্রবার ভোরে ইসরাইল এক বড় ধরনের বিমান হামলা চালায় ইরানের পরমাণু ও সামরিক স্থাপনাগুলোর ওপর। ওই হামলায় ইরানের বেশ কিছু সামরিক অবকাঠামো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানা গেছে।

এরপরই, পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে ইরান এই রকেট হামলা চালায়, যা এক গভীর কৌশলগত বার্তা বলেই মনে করছে বিশ্লেষকরা।

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন,

 

ইসরাইল আমাদের স্থাপনাগুলোর ওপর যে অন্যায় আগ্রাসন চালিয়েছে, তার কঠিন মূল্য দিতে বাধ্য হবে। এই হামলার পরিণাম ভয়াবহ হবে।”

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের পাল্টাপাল্টি হামলা মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন যুদ্ধের সূচনা ঘটাতে পারে। ইসরাইল ও ইরান—দুই দেশই যদি সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে তার প্রভাব শুধু এই অঞ্চলেই নয়, গোটা বিশ্ব অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও ভূরাজনীতির ওপর মারাত্মক ছাপ ফেলবে।

ইতিমধ্যেই জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং দু’পক্ষকে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়েছে।

 

রিশোন লেজিয়োনসহ আশেপাশের অঞ্চলগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অধিকাংশই রাত কাটাচ্ছেন শেল্টারে। শহরের স্কুল, হাসপাতাল এবং প্রশাসনিক ভবনগুলোতে উচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যেকোনো মুহূর্তে আরও হামলা হতে পারে—তাই গোটা অঞ্চলে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও আকাশপথে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

 

ইরান-ইসরাইল সংঘর্ষ আর কোনো সীমায় আটকে নেই। রকেট, বিমান হামলা, মৃত্যুর মিছিল — সব মিলিয়ে মধ্যপ্রাচ্য আবারো দাঁড়িয়েছে অনিশ্চয়তা আর রক্তাক্ত ভবিষ্যতের দ্বারপ্রান্তে।
বিশ্ববাসী তাকিয়ে আছে, এই উত্তাল আগুন কখন থামবে।

Hiçbir yorum bulunamadı