ইরানের কেন্দ্রস্থলে, বিশেষ করে তেহরানের আশেপাশে, মসাদের এক তিন তলা গোপন ড্রোন কারখানা গড়ে উঠেছে—এই তথ্য প্রকাশিত হলো সাম্প্রতিক গোয়েন্দা অভিযানের মাধ্যমে । আন্তর্জাতিক গোয়েন্দারা বলছেন, ২০২৫ সালের জুনে চালানো অপারেশন “Rising Lion”-এর অংশ হিসেবে মসাদ তার এই গোপন ঘাঁটি থেকে ইরানের স্যাটেলাইট মিসাইল ও ড্রোন প্রতিরোধী নজরদারি চালিয়েছে।
এটি একটি তিন তলা, মাটির নীচে স্থাপিত কারখানা, যেখানে ড্রোন সমাবেশ, মেরামত এবং লঞ্চ প্ল্যানিং করা হয়। প্রতি তলায় ড্রোন অস্থায়ী জমাতে, পরিবহন-সমন্বয় এবং বৈদ্যুতিক সিগন্যাল হামলা চালানো হয়। কারখানাটি অনানুষ্ঠানিকভাবে শহুরে আবাসন হাঁটুর মধ্যে লুকানো; বাইরে তাকালে সাধারণ কোনও বিল্ডিং মনে হয় না
-
ধাপে ধাপে বিস্তৃতি: ২০২৪ থেকে শুরু করে মসাদ টুকরো টুকরো ড্রোন উপাদান ইরানে নিয়ে আসে- স্যুটকেস, ট্রাক ও ধারালো ডিপ্লয়মেন্ট মাধ্যমে ।
-
অপারেটরদের লুকানো: স্থানীয় কনভিওয়ে ড্রাইভার ও টেকনিশিয়ানদের মাধ্যমে সিকিউরেন্সি বজায় রেখে মসাদ দীর্ঘ দিন গোপনে এই ঘাঁটি তৈরি করেছে।
-
ট্যাকটিক্যাল পরিকল্পনা: প্রথমে ছোট ও বোমা-ভর্তি স্পাই ড্রোন মাঝ রাতে ইরানির প্রতিরক্ষা সিস্টেমে ঢুকে হামলা চালায়—এর ফলে বড় আকারের আইএএফ (ইস্রায়েলি এয়ার ফোর্স) বিমান হামলার পথ প্রশস্ত হয় ।
-
ড্রোন হ্যাকার স্ট্রাইক: গোপন ড্রোন ঘাঁটি থেকে অবরুদ্ধ স্যাটেলাইট ও মিসাইল বায়পাস করে হামলা চালানো হয় ইরানির এমওবি (surface-to-surface missile) সাইটে—বিশেষ করে Esfajabad, Kermanshah, Esfahan এলাকায়
-
মিলিটারাইজড সমন্বয়: ঘাঁটি থেকে চালানো ড্রোন হামলার সঙ্গে সংযুক্ত হয় আকাশ-হাওয়ায় ইজরায়েলি বিমান বাহিনীর বড় বিমান হামলা, যা শতাধিক টার্গেট আঘাত করে ।
-
প্রতিকূলতা ভেঙে দেয়: কারখানায় হামলা ইরানের SAM (surface-to-air missile) ও এয়ার-ডিফেন্স সিস্টেম নষ্ট করার কারণে ইজরায়েলি বিমান হামলা সহজ হয়েছে, বলে দাবি ইস্রায়েলি আধিকারিকদের ।
-
মধ্যপ্রাচ্যের নতুন যুদ্ধক্ষেত্রের সূচনা: এর মাধ্যমে ইরান-ইজরায়েল গোপন যুদ্ধ কেবল বর্ডার নাই, বরং ইরানেই পৌঁছে গেছে—এই নয়া বাস্তব অবতীর্ণ হয়েছে।
-
আন্তর্জাতিক উদ্বেগ: বিশ্ব নেতারা—ইউরোপ, জি৭—সমন্বয় করে মসাদ নীতি ও ফলাফল নিয়ে বৈশ্বিক নিরাপত্তা ডাকা জরুরি বলে উল্লেখ করেছে ।
ইরানি সরকার এখনও এই গোপন ড্রোন কারখানার তত্ত্ব স্বীকার করেনি; বরং এটিকে “ধ্রুপদী সামরিক কার্যক্রমের অংশ নয়” বলে জানায় । তবে ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় “অকারণ আক্রমণ” ও “সংকট সৃষ্টি” বলে এবারের হামলাকে দোষারোপ করেছে ।
-
ইরান প্রতিশোধের পরিকল্পনা করছে, বিশেষ করে তার আঞ্চলিক সহযোগীদের (যেমন: হেজবোলা, হাশদ) মাধ্যমে—তবে এই হামলা এর চেয়েও বিস্তৃত হতে পারে ।
-
যুক্তরাষ্ট্র তৎক্ষণাৎ এয়ার-ডিফেন্স সাপোর্ট দিয়েছে ইজরায়েলকে, যাতে চূড়ান্ত পরিবর্তন না হয়—বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের সামুদ্রিক ও বন্দর জোনে ।
-
আঞ্চলিক নিরাপত্তা-সংঘটন গোষ্ঠীগুলো ইতিমধ্যেই শান্তি আহ্বান করছে; তবে যুদ্ধে আপাতত কোন বিরতি দেখা যাচ্ছে না ।
এই তিন-তলা গোপন ড্রোন কারখানা নিয়ে প্রকাশিত তথ্য—মসাদের মধ্যপ্রাচ্যে লুকিয়ে থাকা জটিলতা ও গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনার নমুনা। একই সাথে, এই ঘটনা প্রমাণ করে যে বর্তমান যুদ্ধচক্র শুধুমাত্র সীমান্তের বাইরে নয়, বরং দেশ-অভ্যন্তরে প্রবাহিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত, এবং পুনরাবৃত্তিসহ আরও ঢেলে সাজানো হচ্ছে সামরিক কৌশল।