মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা যখন চরমে, তখনই ফের দৃপ্ত কণ্ঠে বিশ্বকে নাড়িয়ে দিলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শাস্তি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে তিনি জানিয়ে দিলেন, ‘এ যুদ্ধ থামবে না, শত্রুরা পরিণতি পেতেই চলেছে।’
যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইসরায়েলি অভিযানে জড়িয়ে পড়ার পর এই প্রথমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুখ খুললেন খামেনি। এক্স-এ দেওয়া বিবৃতিতে তিনি লেখেন,জায়োনিস্ট শত্রু বড় ভুল করেছে, বড় অপরাধ করেছে; তাদের শাস্তি পেতেই হবে এবং সেটি চলছে, এখনই চলছে। আল্লাহু আকবার।
খামেনির এই বার্তা মুহূর্তই ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন মাধ্যমে। বিশেষ করে ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই মন্তব্যকে বিশ্লেষকরা দেখছেন নতুন এক ধাপে রূপান্তরের ইঙ্গিত হিসেবে।
বিবৃতির সঙ্গে প্রকাশিত ছবিটিও ছিল বিশেষভাবে প্রণোদনামূলক। তাতে দেখা যায় দাউ দাউ আগুনে জ্বলতে থাকা একটি খুলি, যার ওপর আঁকা ডেভিডের তারা চিহ্ন—যা ইসরায়েলের প্রতীক। ছবির পেছনে জ্বলন্ত ভবনের দৃশ্য গোটা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহভাবে তুলে ধরে। এটি কেবল একটি ছবি নয়—এ যেন এক প্রতীকী যুদ্ধঘোষণা।
তবে আশঙ্কা করা হলেও, খামেনি তার বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরাসরি হামলার কোনো ইঙ্গিত দেননি। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি একপ্রকার কৌশলগত নীরবতা। কারণ, সরাসরি যুদ্ধ শুরু না করে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমেই ইরান তার অবস্থান ধরে রাখতে চায়।
খামেনির এই বার্তার পরপরই আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। অনেকেই একে আঞ্চলিক যুদ্ধের পূর্বাভাস হিসেবে দেখছেন। যুক্তরাষ্ট্র এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে কূটনৈতিক মহলে আলোচনার ঢেউ উঠেছে।
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এই বক্তব্য নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসেনি। তবে দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) ইতিমধ্যে সীমান্তে সতর্কতা জারি করেছে। হামাস ও হিজবুল্লাহর সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার দিকেও নজর রাখা হচ্ছে।
খামেনির এই হুঁশিয়ারি বিশ্ব কূটনীতিকে নতুন করে নাড়া দিয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে নতুন ফ্রন্ট খুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও সরাসরি যুদ্ধ এখনো শুরু হয়নি, তবে শব্দের লড়াই যে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে, সেটি স্পষ্ট।