close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

হাসনাত আবদুল্লাহকে বক্তব্য প্রত্যাহারে সাত দিনের আল টিমে টাম: বিএনপির নেতারা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
কুমিল্লায় বিএনপির বিরুদ্ধে 'আওয়ামী লীগের টাকায় রাজনীতি' করার অভিযোগ এনেছিলেন এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ। এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ বিএনপি নেতারা তাঁর বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন—সাত দিনের মধ্যে ক..

৭ দিনের আলটিমেটাম: হাসনাত আবদুল্লাহর বিতর্কিত মন্তব্যে ফুঁসে উঠেছে কুমিল্লার বিএনপি
রিপোর্ট: নিজস্ব প্রতিবেদক

কুমিল্লায় একটি সাম্প্রতিক অনুষ্ঠানে এনসিপি (ন্যাশনালিস্ট কনজারভেটিভ পার্টি) মুখপাত্র হাসনাত আবদুল্লাহর এক মন্তব্য ঘিরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর বিএনপির মধ্যে। বিএনপির রাজনীতিকে “আওয়ামী লীগের টাকায় পরিচালিত” বলে দাবি করে বিতর্কের জন্ম দেন তিনি। এরই প্রেক্ষিতে বিএনপির পক্ষ থেকে তাঁকে সাত দিনের আলটিমেটাম দিয়ে বলা হয়েছে, এই সময়ের মধ্যে বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে কুমিল্লায় তাঁর কোনও প্রকার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না।

সোমবার (১৯ মে) কুমিল্লা প্রেসক্লাবে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়া, যিনি বলেন, “গত শুক্রবার কুমিল্লার এক অনুষ্ঠানে হাসনাত আবদুল্লাহ দাবি করেন, এখানে বিএনপির রাজনীতি আওয়ামী লীগের অর্থায়নে চলছে। এটি শুধু হাস্যকর নয়, অত্যন্ত শিশুসুলভ ও অবাস্তব মন্তব্য।”

তিনি আরও বলেন, “হাসনাত আবদুল্লাহ রাজনীতিতে অপরিপক্বতার পরিচয় দিচ্ছেন। আমরা মনে করি, তাঁর মানসিকভাবে পরিপক্বতা অর্জনের দরকার আছে, এমনকি হয়তো মানসিক চিকিৎসাও দরকার হতে পারে। রাজার পার্টির মুখপাত্র হিসেবে তাঁর কথায় কোনো রাজনীতির পরিণত প্রতিফলন নেই। রাজনীতিতে সহনশীলতা থাকা উচিত এবং প্রতিদ্বন্দ্বী দলের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা উচিত।”

“কুমিল্লা বিএনপিকে অপমান মানে পুরো দলকে অপমান”
সেলিম ভূঁইয়া স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্যে কুমিল্লার বিএনপির নেতা-কর্মীরা চরমভাবে ক্ষুব্ধ। তাঁর এই কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য প্রত্যাহার না করা হলে তাঁকে কুমিল্লার মাটিতে কোনোরকম জনসভা বা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেওয়া হবে না।”

তিনি কুমিল্লা বিএনপির ঐতিহাসিক ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, “কুমিল্লা জেলা বিএনপির অন্যতম শক্ত ঘাঁটি। এই জেলার নেতারা জাতীয় পর্যায়ে দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এম কে আনোয়ার, কর্নেল আকবর হোসেন, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, বেগম রাবেয়া চৌধুরীর মতো নেতারা এখানকারই সন্তান। এই জেলার বিরুদ্ধে কেউ মিথ্যা অপবাদ দিলে, তা পুরো দলের মান-সম্মানের ওপর আঘাত বলে বিবেচিত হয়।”

“সরকার রাজনৈতিক কৌশলে বিতর্ক ছড়াচ্ছে”
সেলিম ভূঁইয়া এ সময় অভিযোগ করেন, “সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনৈতিক মাঠে এমন কিছু অপরিণত নেতাকে নামিয়ে বিতর্ক তৈরি করছে। জনগণের দৃষ্টি ভিন্নদিকে ঘুরিয়ে দিতে চায় তারা। আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি—এইসব ছেলেমানুষি নেতাদের দিয়ে রাজনৈতিক মাঠ নষ্ট না করে একটি নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।”

তিনি আরও বলেন, “জুলাই-আগস্টের গণবিপ্লবে বিএনপি জনগণের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের জন্য আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছে। আমাদের নেতা তারেক রহমান সরাসরি আন্দোলনের তদারকি করছেন। দলের নেতা-কর্মীরা মাঠে আছে, থাকবে, যতক্ষণ না পর্যন্ত এই সরকার বিদায় নেয়।”

উপস্থিত নেতারা কি বললেন?
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগ) মোস্তাক মিয়া, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন, সদস্যসচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম এবং মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উৎবাতুল বারী আবু।

তাঁরা একমত পোষণ করে বলেন, “এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন ও বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য রাজনৈতিক পরিবেশকে আরও বিষাক্ত করে তুলছে। এমন আচরণ গণতন্ত্রের পথকে বাধাগ্রস্ত করে। আমরা চাই, রাজনীতিতে শালীনতা ফিরুক এবং যারা ভুল করেছেন, তাঁরা যেন তা প্রকাশ্যে স্বীকার করেন।”

শেষ কথা
বিএনপির পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, সাত দিনের মধ্যে হাসনাত আবদুল্লাহ তাঁর বিতর্কিত বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে কুমিল্লায় কোনও প্রকার রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে পারবেন না তিনি। বিএনপির এ ঘোষণা শুধু রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া নয়, এটি তাদের সাংগঠনিক সংহতির একটি কঠিন বার্তাও বটে।

No se encontraron comentarios