বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) ২৬ জনকে গুম ও অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের অপেক্ষায় দেশ। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং সাবেক ও বর্তমান ১১ জন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আজ বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দিতে পারেন। গত ৭ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ এই মামলায় তাদের অভিযোগ উপস্থাপন শেষ করে এবং সুনির্দিষ্ট ৫টি অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে বিচার শুরুর দাবি জানায়।
রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে উঠে এসেছে এক লোমহর্ষক চিত্র। সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে যে, জেআইসি সেলে বছরের পর বছর ধরে শত শত মানুষকে বন্দি রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালানো হয়েছে। আবদুল্লাহিল আমান আযমী ও মাইকেল চাকমার মতো ব্যক্তিরা দীর্ঘ সময় গুম থাকার পর মুক্তি পেলেও অনেকে এখনো নিখোঁজ। রাষ্ট্রপক্ষ দাবি করেছে, এই সব গুম ও নির্যাতনের মূল পরিকল্পনা এবং নির্দেশনা আসত সরাসরি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে, যা মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করতেন তারিক আহমেদ সিদ্দিক ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
আসামি তালিকায় ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচজন মহাপরিচালক এবং পাঁচজন পরিচালকসহ একজন সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রয়েছেন। যদিও শেখ হাসিনাসহ অধিকাংশ আসামি পলাতক, তবে এই মামলায় গ্রেপ্তারকৃত তিনজন আসামির উপস্থিতিতে বিচারিক প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা এই অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন দাবি করে তাদের মক্কেলদের অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছেন। আজ বিচারিক প্যানেল সেই আবেদনের ওপর ভিত্তি করে তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন। একই দিনে জুলাই বিপ্লবের সময় চানখারপুলে ৬ জনকে হত্যার ঘটনায় সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ৮ জনের বিরুদ্ধেও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের কথা রয়েছে।



















