close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

গুজবের ডালপালা: আতঙ্ক ছড়িয়ে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র!

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একের পর এক গুজব ছড়িয়ে জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মত দিচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুজব সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত ..

গুজবের ছোবলে অস্থিরতা: পরিকল্পিত অপতৎপরতা রুখতে মাঠে প্রশাসন

সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একের পর এক গুজব ছড়িয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক ইস্যুগুলোর কেন্দ্র করেই এসব অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞদের মতামত। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নাসিমুল গনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, 'দেশে জরুরি অবস্থা নিয়ে যা ছড়ানো হচ্ছে, এটা গুজব।'

শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি গুজব ছড়ায়, যেখানে বলা হয় ‘গত দু’দিনে ৩৩ জন বিজিবি সদস্য নাফ নদে মিশনে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন।’ পরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এই তথ্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে নিশ্চিত করে।

গুজবের সূত্র ও লক্ষ্য

বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে নানা ধরনের গুজব ছড়াচ্ছেন। এতে তাদের উদ্দেশ্য জনমতকে প্রভাবিত করা এবং সরকারকে বিতর্কিত করা। কিছু গ্রুপ আর্থিক সুবিধা নিতে গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছে, যেখানে তারা ক্লিকবেইট কনটেন্ট ব্যবহার করছে।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই গুজব ছড়িয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছে। অনেক ফেসবুক আইডি ও গ্রুপকে বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এসব আইডির বেশিরভাগই রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এবং পরিকল্পিতভাবে ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে।

গুজব চিহ্নিত করতে পুলিশের বিশেষ নজরদারি

পুলিশের সাইবার ইউনিট জানিয়েছে, তারা ২৪ ঘণ্টা অনলাইনে নজরদারি করছে এবং যারা এসব গুজব ছড়াচ্ছে, তাদের শনাক্ত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি বড় গুজব চিহ্নিত করা হয়েছে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপির ফ্যাক্ট চেকিং বিভাগের অনুসন্ধানী সাংবাদিক মোহাম্মদ ইয়ামিন জানিয়েছেন, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তৈরি করা এই গুজবগুলো দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার জন্যই ছড়ানো হচ্ছে।’

গুজবের সাম্প্রতিক কিছু উদাহরণ:

 ‘প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করেছেন, জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠিত হচ্ছে’— এই তথ্যটি সম্পূর্ণ গুজব। 

‘এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ গ্রেপ্তার’— এটা ভুয়া খবর। 

‘ঢাকার রাস্তায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নেমে পড়েছে’— প্রকৃতপক্ষে, ভিডিওটি এক বছর আগের একটি অনুষ্ঠানের।

সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষক তানভীর হাসান জোহা বলেন, ‘জনমত প্রভাবিত করতে এবং রাজনৈতিক বা সামাজিক ইস্যুতে বিভ্রান্তি ছড়াতে এসব গুজব ছড়ানো হয়। এটি জনগণের মধ্যে ভয়, উদ্বেগ ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করে।’

সতর্ক থাকার পরামর্শ

বিশেষজ্ঞদের মতে, গুজব প্রতিরোধে সাধারণ জনগণেরও সচেতন হওয়া জরুরি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া যেকোনো তথ্য যাচাই না করে শেয়ার না করার পরামর্শ দিয়েছেন ফ্যাক্ট চেকাররা। পাশাপাশি, গুজব চিহ্নিত করতে প্রোফাইল বিশ্লেষণ করারও তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের (উত্তর) উপকমিশনার মহিউদ্দিন মাহমুদ সোহেল জানিয়েছেন, ‘গুজব ছড়ানোদের চিহ্নিত করে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

জনগণের উচিত গুজবে কান না দেওয়া এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য যাচাই করা। সরকারের পক্ষ থেকেও গুজবের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে।

לא נמצאו הערות